৯/১১ হামলার নথি প্রকাশ করেছে এফবিআই

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

সেপ্টেম্বর ১২, ২০২১, ১১:১৫ এএম

৯/১১ হামলার নথি প্রকাশ করেছে এফবিআই

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টুইন টাওয়ারে হামলার ঘটনার প্রথম নথি প্রকাশ করেছে মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। শনিবার (১১ সেপ্টেম্বর) মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে।

তদন্ত সম্পর্কিত নথি প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছিলেন ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় হতাহতদের স্বজনেরা। গত শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নির্বাহী আদেশের পর এই নথি প্রকাশ করা হলো।সেখানে ৯/১১’র সন্ত্রাসী হামলার তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত একাধিক নথি থাকতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এফবিআই’র ২০১৬ সালের এসব নথিতে লস অ্যাঞ্জেলেসের সৌদি কনস্যুলেটের একজন কর্মকর্তা এবং একজন সৌদি গোয়েন্দা এজেন্ট সেদিনের হামলায় ব্যবহৃত উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীদের অন্তত দুজনকে যানবাহন সহযোগিতা করেছে বলে যে অভিযোগ রয়েছে, সে বিষয়ে এফবিআইয়ের করা তদন্তের বিস্তারিত রয়েছে।

লস অ্যাঞ্জেলেসে বসবাসকারী সৌদি শিক্ষার্থী ওমর আল-বিয়ুমী ওমর আল-বেয়ুউমী সম্পর্কিত প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা ও অন্যান্য যোগসূত্রের বিস্তারিত রয়েছে এই নথিতে। যার ফলে ওমর আল-বিয়ুউমীকে সৌদি আরবের গোয়েন্দা এজেন্ট হিসেবে সন্দেহ করে এফবিআই।

মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাটির নথির বর্ণনায়—দুজন উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীকে ভ্রমণে সহায়তা, থাকার ব্যবস্থা ও অর্থায়নে গভীরভাবে জড়িত ছিলেন সৌদি শিক্ষার্থী ওমর আল-বিয়ুউমী।

ওয়াশিংটন ডিসির সৌদি দূতাবাস গত বুধবার এফবিআইয়ের যেকোনো নথি প্রকাশকে স্বাগত জানায়। একই সঙ্গে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় সৌদি আরবের জড়িত থাকার দাবিও মিথ্যা বলে উল্লেখ করে সৌদি দূতাবাস।

অন্য দিকে, মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ এই হামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের সদস্যেরা গত ২ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে এফবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদন খতিয়ে দেখার আবেদন জানান। তাঁদের দাবি, এফবিআই মিথ্যা বলেছে অথবা উড়োজাহাজ ছিনতাইকারীদের সঙ্গে সৌদি আরবের যোগসূত্র প্রমাণকারী আলামত ধ্বংস করে ফেলেছে।

গত ৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নথিগুলো প্রকাশের উদ্দেশে পর্যবেক্ষণ করতে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগকে নির্দেশ দেন।

এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর আগে আমি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। নৃশংস এই হামলার ২০তম বার্ষিকীতে আমি সেই প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান জানাচ্ছি।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার। চারটি যাত্রীবাহী বিমান ছিনতাই করে নিউইয়র্কের দুটি আকাশচুম্বী ভবনে হামলা চালানো হয়। শুধু আমেরিকানদের জন্যই নয়, গোটা বিশ্বই চমকে গিয়েছিল ঘটনার ভয়াবহতায়।

সেদিন ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তর পেন্টাগনেও হামলা চালানো হয়। এছাড়া আরও একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল পেনসিলভানিয়ার শাঙ্কসভিলে। প্রথম বিমানটি যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে নর্থ টাওয়ারে আঘাত হানে। দ্বিতীয় বিমানটি সাউথ টাওয়ারে বিধ্বস্ত হয় এর অল্প কিছুক্ষণ পরই।

তৃতীয় বিমানটি পেন্টাগনের সদর দপ্তরের পশ্চিম অংশে আঘাত হানে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে। রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির উপকণ্ঠে ছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের বিশাল এই সদর দপ্তর।

এরপর সকাল ১০টা ৩ মিনিটে চতুর্থ বিমানটি আছড়ে পড়ে পেনসিলভেনিয়ার এক মাঠে। এদিকে ভয়াবহ ওই হামলার নথি প্রকাশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন নির্বাহী আদেশ দেওয়ার পর এফবিআই এ সংক্রান্ত নথি প্রকাশ করল। হামলার আগে বিমান ছিনতাইয়ের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের সৌদি সরকার সমর্থন দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

 সূত্র: সিএনএন।

Link copied!