দেশের কারাগারগুলোতে বিভিন্ন অপরাধের সাজা খাটা শেষে প্রত্যাবাসনের অপেক্ষায় থাকা ১৫৭ জন বিদেশি কারাবন্দি রয়েছেন। এর মধ্যে ১৫০ জন ভারতের, পাঁচজন মিয়ানমারের এবং একজন করে পাকিস্তান ও নেপালের নাগরিক রয়েছেন।
রবিবার (২১ জানুয়ারি) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পরবর্তী ধার্য তারিখে প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
গত ১৫ জানুয়ারি, এক রিট আবেদনের শুনানিতে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের বেঞ্চ ১০ মার্চের মধ্যে কারা-মহাপরিদর্শককে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেন। ওই শুনানিতে সাজাভোগের পরও কারাবন্দী রাখা কেনো আইন বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, সেটি জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে ২০২২ সালের ১৯ জানুয়ারি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর থানার বাসিন্দা গোবিন্দ উড়িয়াকে (২৬) আটক করে বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা (বিজিবি)। ওইদিনই আটক ব্যক্তিকে শ্রীমঙ্গল থানায় সোপর্দ করে তার নামে মামলা করে বিজিবি।
তদন্তের পর একই বছর ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগপত্র দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮ এর ২৪২ ধারা ও দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২ আইনের ৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। বিচার শেষে মৌলভীবাজারের চতুর্থ বিচারিক হাকিম এম. মিজবাহ উর রহমান দোষ স্বীকার এবং অতীতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ না থাকায় আদালত গোবিন্দ উড়িয়াকে ২ মাস ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে গত ১১ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী বিভূতি তরফদার। সাজা ভোগ করা কারাবন্দি গোবিন্দ উড়িয়ার কারামুক্তি ও তার প্রত্যাবাসনের সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করা হয় রিটে। গত ১৫ জানুয়ারি এ রটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
অন্তবর্তী আদেশে গোবিন্দ উড়িয়াকে কারামুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়। আর দণ্ড বা সাজা ভোগ করার পরও প্রত্যাবাসনের ব্যবস্থা না করে কারাবন্দি রাখা হয়েছে, এমন বিদেশি নাগরিকদের তালিকা দিতে বলেন আদালত। কারা মহাপরিদর্শককে এ নির্দেশ দিয়ে আগামী ১০ মার্চ পরবর্তী আদেশের তারিখ রাখা হয়েছে।
এরপর আদালতে দাখিলের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেলের জেনারেলের কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠায় কারা অধিদফতর।
কারাবন্দি এ বিদেশি নাগরিকদের সাধারণত অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে দি কন্ট্রোল অব এন্ট্রি অ্যাক্ট, ১৯৫২, পাসপোর্ট আইন, ১৯৫২ এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় হয়েছে।