ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫, ০৪:৩৬ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দুই দশক আগে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীবিরোধী সমাবেশে গ্রেনেড হামলা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানমহ খালাসপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দিয়েছে আদালত।
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক রফিকুল ইসলাম এ আদেশ দেন।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেন বহুল আলোচিত ২১ অগাস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার তারেক রহমান ও সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সব আসামিকে খালাস দিয়ে রায় ঘোষণা করেছিলেন।
দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুর রশীদ মোল্লা বলেন, “মামলায় তারেক রহমানসহ খালাস পাওয়া বেশ কয়েকজন আসামি পলাতক ছিলেন। রায়ে তাদের বিরুদ্ধে পূর্বে থাকা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দেন আদালত।
“হাইকোর্টের সেই আদেশ বিচারিক আদালতে আসলে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তারেক রহমানসহ অন্যদের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা প্রত্যাহারের আবেদন করি। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পরোয়ানা প্রত্যাহারের আদেশ দেন।”
জজ আদালত এ মামলায় ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছিল।
সেই দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আসামিদের করা আপিল মঞ্জুর করার পাশাপাশি মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আবেদন (ডেথ রেফারেন্স) হাই কোর্ট খারিজ করে দিয়েছে।
যারা আপিল করেছেন, তাদের পাশাপাশি যারা করেননি, সবাইকে এ মামলা থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে হাই কোর্টের রায়ে।
রায়ের পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, মুফতি আব্দুল হান্নানের জবানবন্দির ভিত্তিতে যে সম্পূরক অভিযোগপত্রের ভিত্তিতে এ মামলার বিচার শুরু হয়েছিল, সেই অভিযোগপত্রই ছিল অবৈধ।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের সময়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ওই ঘটনা আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আলোড়ন তুলেছিল।
সে সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। আর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা তখন বিরোধী দলীয় নেতা।
১৪ বছর পর ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর দণ্ডবিধি ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে দায়ের করা দুই মামলার রায় দেন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।
সেই রায়ে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
আর খালেদা জিয়ার বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।
এছাড়া এ মামলার আসামি ১১ পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন ঢাকার এক নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।
ওই রায়ের ছয় বছর পর গেল বছরের পয়লা ডিসেম্বরে হাই কোর্টের রায়ে সব আসামির খালাস মেলে।