শতবর্ষী আইন সংশোধন করেও কমানো যাচ্ছে না প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুরতা। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কুকুর হত্যার দৃশ্য ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, ২৯ জুলাই রাজধানীর শেওড়াপাড়ায় ৩ নম্বর রোডে ধাওয়া করে কুকুর পিটিয়ে মারা হচ্ছে। পরে সেটিকে দড়ি দিয়ে টেনে ফেলে দেয়ার দৃশ্যও ধরা পড়ে।
খোদ রাজধানীতে এমন দৃশ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে উঠেছে সমালোচনার ঝড়। কুকুর-বিড়াল হত্যা বা নিষ্ঠুরতার ঘটনায় বেশ সক্রিয় এই সব গ্রুপগুলো।
শেওড়াপাড়ার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেন্সন অফ ক্রুয়ালিটি টু এনিমলসের (বিএসপিসিএ) স্বেচ্ছাসেবক শাহরিন তামান্না দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড দেখে আমরা আসলেই মর্মাহত। এমন ঘটনা ঐ এলাকায় প্রায়ই হচ্ছে। আমরা সেখানকার কাউন্সিলর ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে এই ঘটনা নিয়ে আলাপ করবো। আর দোষী ব্যক্তিকে সনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে।
‘দ্য ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমেলস অ্যাক্ট ১৯২০’ বাতিল করে ২০১৯ সালে প্রাণীকল্যাণ আইন প্রণয়ন করে সরকার। আইনে বলা আছে, কোনো ব্যক্তি যদি প্রাণীকে ওষুধ অথবা বিষ মেশানো খাবার খাওয়ান বা বিষ প্রাণীর দেহে প্রয়োগ করেন, এ ধরনের কাজ করার চেষ্টা করেন বা করতে সহায়তা করেন এবং এতে প্রাণীর মৃত্যু বা স্থায়ী অঙ্গহানি অথবা স্বাভাবিক আকার ও কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়, তাহলে সেটা অপরাধ বলে গণ্য হবে।
এ আইনে সাজা হিসেবে অনধিক ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার কথা বলা আছে। সর্বোচ্চ সাজা অনধিক দুই বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডের বিধান আছে। এই আইনের অধীন সংঘটিত অপরাধ অ-আমলযোগ্য ও জামিনযোগ্য।
এদিকে প্রাণীদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ কেউ কেউ বলছেন, প্রাণীর ওপর নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে মামলা করেন বলে অনেকেই তাদের নিয়ে হাসাহাসি করেন। মামলার আসামি প্রভাবশালী হলে ভোগান্তির মাত্রা বাড়ে। তারা মনে করেন, সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পাওয়া গেলে প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজগুলো করা অনেক সহজ হতো।