পরীক্ষা দিতে নিয়ে যাওয়ার পথে মায়ের বুকে ছুরি মারলো মেয়ে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১৭, ২০২৩, ০২:৪৩ এএম

পরীক্ষা দিতে নিয়ে যাওয়ার পথে মায়ের বুকে ছুরি মারলো মেয়ে

ছবি: সংগৃহীত

সিরাজগঞ্জে একটি বাসে মাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া মেয়ে। পুলিশ বলছে, অন্য ধর্মের যুবকের সাথে প্রেমের সম্পর্কে বাধা দেওয়ায় ওই তরুণী এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।

নিহতের নাম ঝুমা কর্মকার (৪৫)। তিনি বগুড়ার শেরপুর পৌর শহরের উত্তর সাহাপাড়া মহল্লার স্বর্ণ ব্যবসায়ী শিবদাস কর্মকারের স্ত্রী। গ্রেপ্তার রয়েছেন, তাঁদের মেয়ে পূজা কর্মকার সিঁথি (২২)। তিনি ঢাকায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

সোমবার রাতে সিরাজগঞ্জের রামগঞ্জ থানায় মেয়ের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের স্বামী। সোমবার দুপুরে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিফ মোহাম্মাদ সিদ্দিকুল ইসলাম। তিনি প্রতিবেদনে বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহতের স্বামী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তাদের মেয়েকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

নিহতের প্রতিবেশীরা বলছে, পূজা কলেজে পড়ার সময় এক মুসলিম শিক্ষকের সাথে প্রেমে জড়িয়ে পড়েন। ওই শিক্ষকের বাড়ি সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনার নিশিন্দারা এলাকায়। কয়েক মাস আগে পূজা তাঁর সাথে পালিয়ে যান। 

পরে পরিবারের লোকজন তাঁকে ফিরিয়ে আনার পর থেকে পরিবারের সাথে অসংলগ্ন আচরণ করতেন পূজা। এ ছাড়াও ঢাকায় পড়ালেখা শুরুর পর মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন তিনি। এ কারণে তাঁকে বাড়িতেই রাখা হতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষার আগের দিন তাঁর মা তাকে নিয়ে যেতেন, আবার পরের দিন নিয়ে আসতেন।

ওসি বাবু কুমার বলেন, আগামীকাল মঙ্গলবার পূজার বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছিল। এ কারণে মা ঝুমা কর্মকার মেয়েকে ঢাকায় রাখতে যাচ্ছিলেন। আজ দুপুর ১টার দিকে বাসটি মহাসড়কের চান্দাইকোনা পৌঁছালে পূজা বাসের সুপারভাইজারকে বলেন জানালা দিয়ে তাঁর বই পড়ে গেছে। পূজার কথায় বাস থামানো হলে তাঁর মা সিট থেকে উঠে দাঁড়ায়।

এ সময় ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে মায়ের পেটে ও বুকে আঘাত করে দ্রুত বাস থেকে নেমে যান পূজা। এ সময় বাসের যাত্রীদের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন পূজাকে একটি দোকানে আটকে রাখেন। গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ঝুমাকে রায়গঞ্জ উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।

‘নিহতের লাশ ও তাঁর মেয়ে রায়গঞ্জ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। নিহতের মেয়ের ব্যাগ থেকে রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে।এই ঘটনার পর ওই শিক্ষককে আটক করতে গিয়ে পাওয়া যায়নি।’

Link copied!