কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

জাতীয় ডেস্ক

জুলাই ১৪, ২০২৪, ০৬:১০ পিএম

কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ

কোটা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা/ ছবি: দ্য রিপোর্ট ডট লাইভ

সরকারি চাকরিতে কোটাপদ্ধতি বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া ২৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রোববার (১৪ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট এ রায় প্রকাশ করেন।

এর আগে গত ৫ জুন সরকারি চাকরিতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এরপর ৯ জুন হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ওইদিন এই আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগে পাঠিয়ে দেন চেম্বার আদালত।

গত ৪ জুলাই প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রাখার নির্দেশ দেন। পরে ১০ জুলাই হাইকোর্টের দেওয়া রায়ে চার সপ্তাহের জন্য স্থিতাবস্থা দেন আপিল বিভাগ।

এর আগে, রোববার দুপুর ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিবের কাছে স্মারক লিপি জমা দেন।

প্রতিনিধি দলে ছিলেন নাহিদ ইসলাম, আব্দুল কাদের, আসিফ মাহমুদ, মো. মাহিন সরকার, হাসিব ইসলাম, সারজিস আলম, মেহেরুন নেসা, সুমাইয়া, আসিফ, রিফাত, আরিফ ও মাসুদ।

বেলা ১১টার দিকে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে মিছিল বের করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজ শিক্ষার্থীরাও এই মিছিলে যোগ দেন। পথে গুলিস্তানে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন তারা। পরে পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে আবারও বঙ্গভবনের দিকে মিছিল নিয়ে যেতে শুরু করেন আন্দোলরত শিক্ষার্থীরা।

দুপুর ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদলটি বঙ্গভবনে প্রবেশ করে। প্রতিনিধি দলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯ জন ছাড়াও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন কলেজ থেকে একজন করে সদস্য রয়েছেন।

এদিকে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের নির্দেশনা অনুযায়ী বর্তমানে গুলিস্তানের হল মার্কেট মোড়ে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের আর সামনে অগ্রসর না হওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন সমন্বয়করা।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর নবম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেখানে বলা হয়েছিল, ৯ম গ্রেড ও ১০ম-১৩তম গ্রেড পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাতালিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। ওই পদসমূহে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করা হয়। নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ, জেলা কোটা ১০ শতাংশ, উপজাতি পাঁচ ও প্রতিবন্ধীদের এক শতাংশ কোটা বাতিল করা হয়।

এই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ বাতিল চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ২০২১ সালে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করে। গত ৫ জুন রায় দেয় হাইকোর্ট। রায়ে সরকারের পরিপত্র বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা ৩০ শতাংশ কোটা বহাল রাখার আদেশ দেন আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আবেদন করলে ৪ জুলাই আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে নিয়মিত আপিল করতে বলেন। ফলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ও আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে কোট বহাল থাকছে।

Link copied!