আগস্ট ১৬, ২০২৩, ০৮:৪১ পিএম
ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের (গভর্নিং বডি) দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাকের বিরুদ্ধে। কলেজ ছাত্রীকে প্রলোভন ও জোরপূর্বক ধর্ষণের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলায় জামিন আবেদন করলে জামিন না দিয়ে আবেদন ফেরত দিয়েছেন।
বুধবার (১৬ আগস্ট) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আসামি পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভুঁইয়া।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এমরান আহম্মদ ভুঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের (গভর্নিং বডি) দাতা সদস্য মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ছাত্রীর বাবার দায়ের করা ধর্ষণ মামলায় জামিন না দিয়ে আবেদন ফেরত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এর আগে, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীনের আদালতে ওই মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
গত ১০ আগস্ট বাদীপক্ষের আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী জানান, আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নিয়ে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের আদেশ দিয়েছেন।
বাদীর আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী গণমাধ্যমকে বলেন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির দাতাসদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ নালিশি মামলা করেন শিক্ষার্থীর বাবা। মামলায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর বিরুদ্ধে। আদালত বাদীর (ছাত্রীর বাবা) জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি গুলশান থানাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করার আদেশ দেন। সে অনুযায়ী মামলাটি থানা-পুলিশ নথিভুক্ত করে।ৎ
তিনি বলেন, ‘ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে’ হয়রানির অভিযোগে গত ৩১ মে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটি (গভর্নিং বডি)।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, ‘তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতো এবং ছাত্রীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতো। খোঁজখবর নেওয়ার নামে ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতো। কিছুদিন পর মুশতাক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকাছাড়া করার হুমকি দেয়।
এ রকম আচরণের বিষয়ে বাদী কলেজের অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি ‘ব্যবস্থা করতেছি’ বলে অভিযুক্ত মুশতাককে তার অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন এবং ছাত্রীকে ক্লাস থেকে ডেকে এনে অফিস কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
অধ্যক্ষর কাছে বারবার প্রতিকার চাইলেও কোনও সহযোগিতা না করে বরং অভিযুক্ত মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন।
পরে বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন মেয়েকে ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে মুশতাক তার লোকজন দিয়ে সেখান থেকে তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি তার মেয়েকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করছে এবং যৌন নিপীড়ন করছে।’