অবিবাহিতের নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

এপ্রিল ১৭, ২০২৪, ১২:৫৬ পিএম

অবিবাহিতের নামে মাতৃত্বকালীন ভাতা!

ছবি: সংগৃহীত

ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ একাধিক প্রকল্পের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে নীলফামারীর ডিমলায় খালিশা-চাপানী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি। অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।

সূত্র জানায়, উপজেলার খালিশা-চাপানী ইউনিয়নে দুই শতাধিক নারীর নামে মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড অনুমোদন দেন ইউপি চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার। এর মধ্যে প্রায় ৩০টি কার্ড করা হয়েছে অবিবাহিত, সদ্য বিবাহিত এবং ভুয়া নাম-ঠিকানায়। যাদের নাম ব্যবহার করা হয়েছে তারা কার্ডের কথা জানেন না। আর টাকা উত্তোলনে যেসব মোবাইল নম্বর ব্যবহার হয়েছে সেগুলো আছে বন্ধ। অভিযোগ আছে, ইউপি চেয়ারম্যানের যোগসাজশে ৩০ সুবিধাভোগীর নামে ৩ লাখেরও বেশি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র।

মাতৃত্বকালীন ভাতা হয়েছে এক তরুণীর নামে। অথচ অবিবাহিত ওই শিক্ষার্থীসহ সেটি জানে না তার পরিবার। এই নিয়ে ওই শিক্ষার্থীর পরিবার চরম বিপদে পড়েছে। প্রশ্ন করা হলে ওই তরুণীর বাবা বলেন, ‘মেয়ের মাতৃভাতা হলে আমি জানতাম, আমার পরিবারের কেউ না কেউ জানতো। কিন্তু আমরা কেউ কিছু জানি না।’

মাতৃত্বকালীন ভাতায় নাম আসা ওই শিক্ষার্থী বলেন, ‘হুট করে আমি জানতে পারি আমার নামে মাতৃভাতার কার্ড করা হয়েছে। আমি তো অবিবাহিত, আমার সঙ্গে কেমনে কী হলো! আমার ফোনে টাকাও আসে না।’

৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্প, টিআর-কাবিখা প্রকল্প ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান তথা মন্দির সংস্কারের টাকা আত্মসাতের অভিযোগও উঠেছে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানিয়ে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘মেম্বার ও চেয়ারম্যান আমার নাম কাটি দেয়, তারা টাকা বেশি চায়, ৩০ হাজার টাকা চায়।’

মন্দির সংস্কার নিয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন বলেন, ‘আমরা মন্দিরের কাজের ২ লাখ টাকা পাইনি। এখানে কোনো টাকা আমাদের দেয় নাই, আমরা জানিও না। তারাই খরচ করছে, ৫০-৫৫ হাজার টাকার বেশি খরচ করেনি।’

অভিযোগ অস্বীকার করে খালিশা-চাপানী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সহিদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমার জানামতে কোনো অপকর্ম হয় নাই। সকল অভিযোগ মিথ্যা ও ভুয়া। আমাকে হেয় করার জন্য আমার প্রতিপক্ষ মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে।’

জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ বলেন, ‘মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নীতিমালা আছে, ব্যত্যয় হলে তা বাতিল হবে। আর টিআর কাবিখার টাকা যথাযথ ব্যবহার না করলে কমিটি ও সংশ্লিষ্টদের আইনের আওয়ায় আনা হবে।’

Link copied!