আগস্ট ১০, ২০২৩, ০৫:২৩ পিএম
ছাত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ এনে রাজধানীর মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পরিষদের (গভর্নিং বডি) দাতা সদস্য খন্দকার মুশতাককে প্রধান আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর বাবা মো. সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে গত ১ আগস্ট ওই মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীকে দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মামলার বাদীর আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
মামলাটি থানায় নথিভুক্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৮ আগস্ট তারিখ ধার্য করেছেন। আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বাদীর আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী গণমাধ্যমকে বলেন, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির দাতাসদস্য খন্দকার মুশতাক আহমেদের বিরুদ্ধে ১ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ নালিশি মামলা করেন শিক্ষার্থীর বাবা। মামলায় ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি অধ্যক্ষ ফাওজিয়া রাশেদীর বিরুদ্ধে। আদালত বাদীর (ছাত্রীর বাবা) জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি গুলশান থানাকে এজাহার হিসেবে রেকর্ডভুক্ত করার আদেশ দেন। সে অনুযায়ী মামলাটি থানা-পুলিশ নথিভুক্ত করে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গুলশান জোনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাসুম এবিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির এক সদস্যের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা হয়েছে। মামলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষকেও আসামি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করে আমরা আদালতে প্রতিবেদন জমা দেব।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রীকে ফাঁদে ফেলে’ হয়রানির অভিযোগে গত ৩১ মে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা কমিটি (গভর্নিং বডি)।
মামলার আরজিতে বাদী উল্লেখ করেন, তার মেয়ে (ভুক্তভোগী) মতিঝিল আইডিয়ালের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত মুশতাক বিভিন্ন অজুহাতে কলেজে আসতো এবং ছাত্রীকে ক্লাস থেকে অধ্যক্ষের কক্ষে ডেকে আনতো। খোঁজখবর নেওয়ার নামে ছাত্রীকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেখিয়ে প্রলুব্ধ করতো। কিছুদিন পর মুশতাক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হওয়ায় ছাত্রীকে তুলে নিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে করে এবং তাকে ও তার পরিবারকে ঢাকাছাড়া করার হুমকি দেয়।
এ রকম আচরণের বিষয়ে বাদী কলেজের অধ্যক্ষকে (২ নম্বর আসামি) ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। তিনি ‘ব্যবস্থা করতেছি’ বলে অভিযুক্ত মুশতাককে তার অফিস কক্ষে নিয়ে আসেন এবং ছাত্রীকে ক্লাস থেকে ডেকে এনে অফিস কক্ষের দরজা বন্ধ করে দিয়ে আসামিকে সময় ও সঙ্গ দিতে বলেন।
অধ্যক্ষর কাছে বারবার প্রতিকার চাইলেও কোনও সহযোগিতা না করে বরং অভিযুক্ত মুশতাককে অনৈতিক সাহায্য করে আসতে থাকেন।
পরে বাদী উপায় না পেয়ে গত ১২ জুন মেয়েকে ঠাকুরগাঁওয়ের নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে মুশতাক তার লোকজন দিয়ে সেখান থেকে তার মেয়েকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এরপর বাদী জানতে পারেন আসামি তার মেয়েকে একেক দিন একেক স্থানে রেখে অনৈতিক কাজে বাধ্য করছে এবং যৌন নিপীড়ন করছে।