পরকীয়াকে বলা হয় পারিবারিক ও সামাজিক অভিশাপ। কিন্তু কেন পরকীয়ায় জড়ায় মানুষ এ নিয়ে ভেবে দেখা হয় খুব কমই।
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ৯০ শতাংশ মানুষ মানসিক শান্তি খুঁজতে গিয়ে বিবাহবহির্ভূত বা পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরকীয়া সম্পর্কের পিছনের কারণ হিসেবে দেখা হয়- দাম্পত্য জীবনে অশান্তি, মনোমালিন্য, মতের অমিল, একে অপরকে সময় না দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু নতুন কোনো সম্পর্ক এসব সমস্যা না কমিয়ে উল্টো দাম্পত্য জীবন ধ্বংস করে দেয়।
গবেষণা বলছে, যারা ঘন ঘন ভ্রমণ করেন বা বাড়ির বাইরে থাকতে পছন্দ করেন, তারা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে খুব সহজেই জড়িয়ে পড়েন। গবেষকদের মতে, পরকীয়া সব সময় শারীরিক আকর্ষণেই গড়ে ওঠে তা কিন্তু নয়। বেশিরভাগ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক যৌন আসক্তি বা যৌন মিলনের বিষয়ে নয় বরং মানসিক প্রশান্তির সাথে যুক্ত।
একটি গবেষণা বলছে, মানসিক প্রশান্তি খুঁজতে ৯০ শতাংশ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে মানুষ জড়িয়ে পড়েন। আর মাত্র ১০ শতাংশ বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক যৌন মিলনের ওপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে তোলার একটি কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে দাম্পত্য জীবনে একঘেয়েমি বোধ করাকে।
‘গ্লিডেন’ নামক এক ফ্রান্সভিত্তিক বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের একটি ডেটিং অ্যাপ ব্যবহারকারী নারীদের প্রশ্ন করে, কেন তারা স্বামীর সঙ্গে প্রতারণা করছেন। এই অ্যাপের ২০ শতাংশই ভারতীয় হওয়ায় ভারতে সমীক্ষাটি চালানো হয়।
এতে দেখা যায়, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের কারণে ২০-৪০ শতাংশ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। যদিও অনেক দম্পতিই তাদের সামাজিক সম্মান, সন্তানের ভবিষ্যৎ কিংবা পরিবারের কথা চিন্তা করে বিবাহবিচ্ছেদ থেকে সরে দাঁড়ান।
আবার গ্যালাপ পোলের একটি সমীক্ষা বলছে, আমেরিকার ৯১ শতাংশ পুরুষ ও নারী উভয়ই বিশ্বাসঘাতকতাকে নৈতিকভাবে ভুল বলে মনে করেন। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক পরিবার, বিবাহ ও সম্পর্কের ভিত্তির জন্য হুমকিস্বরূপ। এটি নৈতিক মূল্যবোধের অনুপস্থিতি ও বিশ্বাসভঙ্গের ফলাফল।
বিজ্ঞানীদের মতে, বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক এড়াতে দম্পতিদের মধ্যে ভালো বোঝাপড়া, মানসিক, আধ্যাত্মিক ও শারীরিক সংযোগ থাকাই সমাধান।
সূত্র: দ্যপাইওনিওর