গ্রীষ্মকালে এবং বৃষ্টির দিনগুলোতে মশার প্রকোপ বেড়ে যায়। ভোরে এবং রাতে এই প্রকোপ বেশি থাকে। বেশিরভাগ মশাই কেন কানের কাছে ঘুরপাক খায়, সে প্রশ্ন জাগতেই পারে? মশার যন্ত্রণায় রাতের প্রশান্তির নিদ্রা নষ্ট হয়নি এমন মানুষ পাওয়া অনেক দুষ্কর। সন্ধ্যার আড্ডা ভেস্তে যায় মশার এই ঘ্যানঘ্যানানিতে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মশার এমন উপদ্রব স্থান, কাল, পাত্র নির্বিশেষে সব জায়গাতেই দেখা যায়। তবে অন্য সব স্থানের চেয়ে মানুষের কানের কাছেই মশা বেশি ঘোরে।
বিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় অবশ্য এর কারণ খুঁজে পাওয়া গেছে। অ্যানোফিলিস, কিউলেক্স, এডিস, হেমাগোগাস, এই কয়েক প্রজাতির মশা থাকলেও আমাদের দেহে সাধারণত কামড়ায় অ্যানোফিলিস প্রজাতির স্ত্রী মশা। এসব প্রজাতির মধ্যে বাড়িতে থাকা আকারে বড় কিউলেক্স প্রজাতির মশা বাড়ির দেওয়ালে বসে থাকতে দেখা যায়। তবে এসব মশা মানুষের রক্ত খায় না। গাছের পাতার রস বা ফুলের রেনু থেকে তারা তাদের প্রয়োজনীয় পুষ্টি সঞ্চয় করে। কেবল স্ত্রী মশাই মানুষের রক্ত চুষে খায়।
তবে পুরুষ কিংবা নারী উভয় মশাকেই মানুষের কানের কাছে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছে, মানুষের শরীর থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইডের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে মশা কানের কাছে বেশি ঘোরাফেরা করে।
এ কার্বন ডাই অক্সাইডের মাধ্যমেই মশা বুঝতে পারে ঘরে প্রাণীর সংখ্যা কেমন হতে পারে। শরীরের অন্য অংশ থেকে কানের কাছে মশার উৎপাতের জোরালো কারণ হলো আমাদের শরীর থেকে সবচেয়ে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয় নাকের ঠিক পেছনে অর্থাৎ কানের কাছে বা মাথার পিছন দিকে।
জীববিজ্ঞানীরা মনে করেন, কানের প্রতি মশার আলাদা কোনও আকর্ষণ নেই। তবে বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড অনুভব করার কারণে তাদের সেন্সরের নির্দেশনায় তারা উড়তে উড়তে কানের কাছে চলে আসে। আর তখনই তাদের পাখার আওয়াজ আমরা শুনতে পাই।