সোনার চেয়ে দামি ‘এক কাপ চা’!

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১১, ২০২১, ০২:১৫ এএম

সোনার চেয়ে দামি ‘এক কাপ চা’!

চা বলতে সচরাচর সুগন্ধযুক্ত ও স্বাদবিশিষ্ট এক ধরনের উষ্ণ পানীয়কে বোঝায় যা চা পাতা পানিতে ফুটিয়ে বা গরম পানিতে ভিজিয়ে তৈরী করা হয়। চা গাছ থেকে চা পাতা পাওয়া যায়। চা গাছের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যামেলিয়া সিনেনসিস। 'চা পাতা' কার্যত চা গাছের পাতা, পর্ব ও মুকুলের একটি কৃষিজাত পণ্য যা বিভিন্ন উপায়ে প্রস্তুত করা হয়।

কিন্তু কখনো শুনেছেন সোনার চেয়ে দামি চা হয়! পৃথিবীতে এমন চাও রয়েছে, যার এক গ্রামের দাম সোনার এক গ্রামের দামের থেকে ৩০ গুণ বেশি!

আমাদের প্রতিদিনের পানীয়ের তালিকায় চা অত্যাবশ্যকীয় এক উপাদান। চায়ের নানা রকমফের। গুণে মানে দামেও বিস্তর তারতম্য। এই পানীয় সুলভ হলেও এমন অনেক চা আছে যার দাম সাধারণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে। চলুন জেনে আসা যাক এমনি কিছু চায়ের নাম:

দা হং পাও

দা হং পাও চায়ের পরিচয় পাওয়া যায় চীনের মিং রাজবংশের সময় থেকে। সময়টা ১৮ শতকের দিকে। এই ব্ল্যাক-টি বিশ্বের অন্যতম দামি চায়ের মধ্যে একটি। এই চায়ের আরও একটি নাম হচ্ছে বিগ রেড রোব-টি অর্থাৎ লাল রঙের গাউন। এই চায়ের স্বাদ অন্যান্য সাধারণ চায়ের মতো নয়। যখনই আপনি এই চা পান করবেন তখনই সেই ১৮ শতকের সময়ের চায়ের স্বাদই পাওয়া যাবে। এ ছাড়া এই চায়ের স্বাদের পাশাপাশি রয়েছে এক ধরনের ফুলের স্বাদ, যা অনেকটা সময় মুখে লেগে থাকে। যেই চায়ের স্বাদ এতটা বৈচিত্র্যময়, স্বাভাবিকভাবে তার দামও সব সময় হাতের নাগালে হবে না। একে দামি বলা হয় এর গুণের জন্যই।

দা হং পাও চায়ের প্রতি গ্রামের মূল্য প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার টাকা। প্রতি কেজির মূল্য সোয়া মিলিয়ন ডলারেরও ওপরে। সত্যি বলতে, স্বর্ণের চেয়েও অন্তত ৩০ গুণ মূল্যবান দা হং পাও। চায়ের দাম অনেক বেশি হলেও বিশ্বজুড়ে এর চাহিদা কম নয়। তবু বাজারমূল্য ঠিক রাখতে চীন সরকার কঠোরভাবে দা হং পাওয়ের চাষ নিয়ন্ত্রণে রাখে।

চীনে এই চায়ের ছয়টি গাছ রয়েছে। বিরল এবং উৎকৃষ্ট গুণমানের জন্য এই চা- কে চায়ের রাজা বলা হয়। ২০০৬ সালে চীন সরকার প্রায় ১১৭ কোটি টাকার বিমা করিয়েছে এই ছয়টি চা গাছের। এক কেজি চায়ের দাম প্রায় আট কোটি ৩০ লাখ টাকা।

এই চা এত মূল্যবান হওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে, একে সংগ্রহ করা হয় প্রায় ৩০০ বছরেরও বেশি পুরনো চায়ের গাছ থেকে। প্রাচীন গাছ থেকে সংগ্রহের পর এসব পাতা শুকানো হয়। এই গাছ সব জায়গায় জন্ম নেয় না। বর্তমানে এই চায়ের জনপ্রিয়তা দেখে কিছু প্রতিষ্ঠান উয়ি সম্প্রদায়ে দা হং পাও-এর কিছু গাছ লাগিয়ে চা সংগ্রহের চেষ্টা করছে। তবে এদের স্বাদ আসল দা হং পাও-এর মতো নয়।

এই চা নিয়ে একটি গল্প প্রচলিত আছে। চীনের এক মিং রাজার মায়ের একবার অসুখ হলো। রাজা মায়ের চিকিৎসা করালেন সাধ্যমতো। সব চিকিৎসা যখন ব্যর্থ, তখনই রাজার মায়ের জীবন বাঁচাল উয়ি পর্বতে খুঁজে পাওয়া এই দা হং পাও চা। প্রথম সেখানেই এই চায়ের সন্ধান মেলে। তখন থেকেই ছড়িয়ে পড়ে এর নাম। হয়ে ওঠে বিশ্বের অন্যতম দামি চা। যে পাহাড়ের চূড়ার চারটি ঝোপে দা হং পাও পাওয়া গিয়েছিল, সেগুলো এখনো সংরক্ষিত আছে।

এই চায়ে রয়েছে ক্যাফেইন, থিওফিলিন, পলিফেনলস এবং ফ্ল্যাবোনয়েড আছে। স্বাস্থ্যের পক্ষে যা খুব উপকারী। প্রতি দিন এই চা খেলে ত্বক ভালো থাকে। মাটির পাত্রে বিশুদ্ধ জলে এই চা বানাতে হয়। সুগন্ধের জন্যও এই চায়ের দাম এত বেশি।

পান্ডা ডাং চা

বিশ্বের অন্যতম দামি কফির নাম কপি লুয়াক। এই কফি তৈরি করা হয় ইন্দোনেশিয়ান এক জাতের বিড়ালের মল থেকে। পান্ডা ডাং চা অবশ্য পুরোপুরি মল দিয়ে তৈরি নয়। তবে কিছুটা মল যে নেই, তা নয়। এই চায়ের চাষ করা হয় পান্ডার মল দিয়ে। বলা হয়, পান্ডারা তাদের ডায়েটে প্রায় ৩০ শতাংশ পুষ্টি রাখে। চা প্রস্তুতকারকরা বিশ্বাস করেন এই ৩০ শতাংশ তো বটেই, পান্ডার ত্যাগ করা মল থেকে বাকি ৭০ শতাংশ অ্যামিনো অ্যাসিড আর পলিফেনলও পান্ডা ডাং চায়ে চলে আসে সারের মাধ্যমে।

এই চায়ের খুব অল্প পরিমাণ প্রস্তুত করা হয় চীনের সিচুয়ান প্রদেশে। এই চাষপদ্ধতি অবশ্য পেশাদার কোনো চা ব্যবসায়ী বা চাষির হাত ধরে শুরু হয়নি। একজন চীনা শিল্পী প্রথম এই চা চাষপদ্ধতি আবিষ্কার করেন। পরে অবশ্য চায়ের পেটেন্ট তিনিই নিয়েছিলেন।

পৃথিবীর অন্যতম মূল্যবান এই চায়ের প্রতি কেজির মূল্য ৭০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ৬০ লাখ টাকা। এই চায়ের স্বাদ কিছুটা বাদামের মতো আর বেশ কড়া ঘ্রাণের। নিয়মিত চা পান করতে ভালোবাসেন এমন চা-প্রেমীদের কাছে এই চায়ের কড়া ঘ্রাণ বেশ ভালো লাগে।

পিজি টিপস ডায়মন্ড-টি ব্যাগ

পিজি টিপস নামে ব্রিটিশ কোম্পানিটির নাম অনেকেই জানেন তাদের চায়ের স্বাদের ভিন্নতার জন্য। ২০০৫ সালে পিজি টিপসের ৭৫ বছর পূর্ণ হয়। এ উপলক্ষে দার্জিলিং চায়ের ডায়মন্ড-টি ব্যাগটি বাজারে আনা হয়। এই চায়ের প্যাকেট পেতে হলে আপনাকে খরচ করতে হবে ১৫ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। দুটো কারণে এই চায়ের এত বেশি দাম। প্রথমত, এটি এক ধরনের বিরল প্রজাতির সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল চা। দ্বিতীয়ত, প্রতিটি টি ব্যাগে রয়েছে ২৮০ টুকরো ২.৫৬ ক্যারেটের হীরে। যার পুরো কারুকার্য করেছে বিখ্যাত বুডলেস জুয়েলার্স। এই চা বাজারে আনা হয়েছিল একদম লিমিটেড এডিশন হিসেবে। কেবল কোম্পানির ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে নয়, ইংল্যান্ডে শিশুদের জন্য একটি তহবিল গঠনের জন্যও এই বিশেষ টি ব্যাগ বিক্রি করা হয়েছিল।

ভিন্টেজ নার্সিসাস চা

দা হং পাও-এর মতো এই ভিন্টেজ নার্সিসাস চায়ের সন্ধানও চীনের উয়ি পাহাড়েই প্রথম পাওয়া যায়। এই চা সংগ্রহ করা হয় গাছের হলুদ রঙের কুঁড়ি থেকে। এর স্বাদ স্তরে স্তরে পরিবর্তিত হয়। মূলত গ্রিক দেবী নার্সিসাসের নামানুসারে এই চায়ের নামকরণ করা হয়েছে। এর বিশেষত্ব হলো, চায়ের ৬০ শতাংশ জারণ করা হয়। যত বেশি পুরনো হয় নার্সিসাস চা, ততই সুপেয় হয়। বছরের পর বছর এটা সংরক্ষণ করা হয়। প্রতি দুই বছর পরপর তাপ দিয়ে পোড়ানো হয়।

এই চায়ের স্বাদ বৃদ্ধির জন্য প্রতিবার পোড়ানোর সময় এর সঙ্গে কাঠ, ফুল কিংবা চকলেটের ফ্লেভার দেওয়া হয়। প্রতি কেজি ভিন্টেজ নার্সিসাস চায়ের মূল্য সাড়ে ৬ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মূল্যে প্রায় ৫ লাখ টাকা। একবার ৫০ বছর পুরনো বক্সে নার্সিসাস উয়ি চা বিক্রির জন্য নিলামে তোলা হয়েছিল। এই চা সংরক্ষণে রাখার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সে সময় বহু সংগ্রহকারী আগ্রহ দেখিয়েছিলেন।

ইয়েলো গোল্ড-টি বাডস

চা তো বহু পান করেছেন, স্বর্ণের চা পান করেছেন কখনো? সরাসরি স্বর্ণ নয় অবশ্য, স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া। ইয়েলো গোল্ড-টি বাডস এমনই এক চা। আর যে চায়ে স্বর্ণের ছোঁয়া লেগেছে সেটি তো দামি হবেই। ইয়েলো গোল্ড-টি বাডসের প্রতি কেজি ৩ হাজার মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২৫ লাখ টাকা। এটি এত মূল্যবান হওয়ার কারণ হচ্ছে এই চায়ের গাছ থেকে যখন পাতা গজায় তখনই পুরো পাতায় ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের প্রলেপ দেওয়া হয়। স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী এই চা বাগান থেকে বছরে কেবল এক দিনই সংগ্রহ করা হয়। শুধু পাতায় লাগানোর জন্যই নয়, চায়ের পাতা সংগ্রহ করতেও ব্যবহার করা হয় স্বর্ণের কাঁচি। সাতবার প্রক্রিয়াজাতকরণের পর বাজারজাত করা হয় এই দুর্লভ প্রজাতির ইয়েলো গোল্ড-টি বাডস। বিশ্বের অন্যতম দামি এই চায়ের প্রস্তুতকারক দেশ চীন।

ব্রোকেন লিফ ব্ল্যাক-টি

চীনের মিং সাম্রাজ্যের সময় থেকেই চায়ের পাতা গুঁড়ো করে অথবা ভেঙে ব্যবহার করা শুরু হয়েছিল। ইউরোপিয়ান একজন ব্যবসায়ী চীনের চা রপ্তানি করতে গিয়ে প্রথম বুঝতে পারেন চা পাতা যদি ভেঙে সুন্দর করে প্যাকেট করা হয় তাহলে জাহাজে আরও বেশি পরিমাণে চা রাখার জায়গা হয়। তখন থেকে ইউরোপিয়ান বাজারে চা পাতা ভেঙে বিক্রির প্রচলন শুরু হয়। যখন থেকে টি ব্যাগ বাজারে আসে, তখন ইউরোপিয়ান চা বিপুল হারে জনপ্রিয় হতে থাকে। এই ইউরোপেই সবচেয়ে পুরনো চা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ব্রোকেন লিফ ব্ল্যাক-টি। এই চায়ের চাষ কেবল ইউরোপেই হয়। এই চায়ের মূল বিশেষত্ব হলো, শুধু চা গাছের তিন নম্বর পাতা থেকেই এই চা উৎপাদন করা হয়। যে কারণে চায়ের স্বতন্ত্র ধরনের তামাটে রং হয়। পাশাপাশি চা পানে ফলের সুবাস পাওয়া যায়। প্রতি কেজি ব্রোকেন ব্ল্যাক-টির মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার কিংবা প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা।

সব মিলিয়েই ব্রোকেন লিফ ব্ল্যাক-টি বিখ্যাত। এই চায়ের মূল বিশেষত্ব হলো, শুধু চা গাছের তিন নম্বর পাতা থেকেই এই চা উৎপাদন করা হয়। যে কারণে চায়ের স্বতন্ত্র ধরনের তামাটে রং হয়। পাশাপাশি চা পানে ফলের সুবাস পাওয়া যায়। প্রতি কেজি ব্রোকেন ব্ল্যাক-টির মূল্য ৪০৫ মার্কিন ডলার কিংবা প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার টাকা।

সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল চা

রং আর কড়া স্বাদ তো বটেই, দামের জন্যও সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল চায়ের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। এ মুহূর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে দামি দশ ধরনের চায়ের তালিকা করলে তাতে স্থান পাবে সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল। এই চায়ের চাষ হয় ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮ হাজার ফুট ওপরে হিমালয়ের কোলে। চা বাগান থেকে পাতা তোলার পর তা পাঠানো হয় ভারতের দার্জিলিংয়ে অবস্থিত মাকাইবাড়ি টি স্টেটে, যেটি পৃথিবীর প্রথম কয়েকটি চা প্রক্রিয়াজাতকারী ফ্যাক্টরির একটি। প্রতি কিলোগ্রাম সিলভার টিপস ইম্পেরিয়াল চায়ের মূল্য ৪০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মানে প্রায় ৩৪ হাজার টাকার কাছাকাছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এটি সবচেয়ে দামি চা।

তিয়েগুয়ানিন চা

তিয়েগুয়ানিন চা পরিচিত ওলং চা নামেও। এই চা সেমি-অক্সিডাইজড। এর প্রস্তুতকরণের কারণে এই চায়ের স্বাদের মধ্যেও বেশ ভিন্নতা কাজ করে। ওলং শব্দের অর্থ কালো ড্রাগন, যার কারণে এর আরেক নাম কালোনাগ চা। এই চায়ের নামকরণ করা হয়েছে চীনের দেবী মার্সি গুয়ানিনের নামে। এতে চায়ের পাতার অক্সিডেশন বা ফার্মেন্টেশনের ওপর চায়ের রং বা গন্ধ পরিবর্তন হয়। পুরোপুরি ফারমেন্ট ও অক্সিডাইজড করা হয় ব্ল্যাক-টি। গ্রিন-টি একেবারেই ফারমেন্ট করা হয় না কিন্তু এই কালো ড্রাগনকে মাঝামাঝি অক্সিডাইজড বা ফার্মেন্ট করা হয়। এতে চা পাতার ফার্মেন্টেশনের রং পরিবর্তনের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তাই গ্রিন-টির চেয়ে কড়া স্বাদ থাকে কিন্তু ব্ল্যাক-টির চেয়ে কম ক্যাফেইন থাকে। মূলত চাটি মেদ কমাতে সাহায্য করে। এই চা প্রথম উৎপাদিত হয় ১৯ শতকের শুরুর দিকে চীনের ফুজিয়াং প্রদেশে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিয়েগুয়ানিন চা সবচেয়ে দামি চায়ের খেতাব ধরে রেখেছে। এই চায়ের প্রতি কেজির মূল্য তিন হাজার ডলার।

এই চা মূল্যবান হওয়ার কারণ এর প্রস্তুতকরণের কারণে। তিয়েগুয়ানিন চা সাধারণত দুই ধরনের হয়। একটি হচ্ছে জেড তিয়েগুয়ানিন। এই পাতা প্রস্তুত করতে পাতাকে ছয় ঘণ্টা কম তাপমাত্রায় রেখে দেওয়া হয়। এতে এর ঘ্রাণ হালকা আর সুগন্ধী হয়। আরেকটি ধরন হচ্ছে রোস্টেড তিয়েগুয়ানিন। এটি প্রস্তুত করার জন্য পাতাকে ৬০ ঘণ্টা উচ্চ তাপমাত্রায় রাখা হয়, যেখানে এটি একদম কালো হয়ে আসে। এই চা পানের সঙ্গে সঙ্গে বেশ কড়া আর ধোঁয়াটে স্বাদ তৈরি হয়।

Link copied!