‘কাজের চাপ। অনেক সময়ে রাত জাগতে হয়। নিয়মিত কফি খাই। আগে ইনস্ট্যান্ট কফিই খেতাম। কখনও কখনও গ্যাসট্রিকের ব্যথা হত। এক বন্ধুর পরামর্শে ফ্রেঞ্চ প্রেসে বানানো কফি খাওয়া শুরু করলাম। এটা বেশি ভাল লাগছে’, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত প্রমিত গুপ্ত এ কথা বলেন।
ইনস্ট্যান্ট কফি আর ফ্রেঞ্চ প্রেসে বানানো কফির মধ্যে প্রধান পার্থক্য কী? গুঁড়ো ইনস্ট্যান্ট কফি গরম পানিতে গুলে নিলেই তৈরি হয়ে যাবে এক কাপ গরম গরম কফি। কিন্তু ফ্রেঞ্চ প্রেসে তা হবে না। কফি বিন গুঁড়িয়ে, তাকে ফ্রেঞ্চ প্রেস যন্ত্রে ভিজিয়ে রাখতে হবে কিছু ক্ষণ। তার পরে ছেঁকে নিতে হবে কফি পানীয়।
হালে ফ্রেঞ্চ প্রেস যন্ত্রে কফি বানানোর অভ্যাস করেছেন পাপিয়া দত্ত। তবে নিজের জন্য না, ছেলের জন্য। কলেজপড়ুয়া ছেলের ঘুম তাড়াতে কফি বানিয়ে দেন পাপিয়া। ‘অনেকের মুখে শুনেছি, এ ভাবে বানানো কফি কিছুটা বেশি স্বাস্থ্যকর। কিন্তু এক বার কফি বানানোর পরে যন্ত্রটা পরিষ্কার করা একটু কষ্টকর ব্যাপার। জালের ফাঁকে কফির গুঁড়ো আটকে থাকে। যন্ত্রের খাঁজগুলোও ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করতে হয়’, বলছেন পাপিয়া।
এই যন্ত্রে বানানোর জন্য কফি পাবেন কোথায়? ব্যবহারকারীরা বলছেন, অনলাইন তো আছেই। ‘যাঁরা কফি ভালবাসেন, তারা নিজেদের পছন্দ মতো কফি বিনের গুঁড়ো কিনে নিতে পারেন’, বলছেন প্রমিত।
তবে প্রতি বার এই যন্ত্রে কফি বানানোর সময়ে স্বাদের পার্থক্য হয়েই যায়। এমনটাই বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী অনুসূয়া প্রামাণিক। কোনও বার একটু বেশি ক্ষণ ভিজিয়ে রাখলে কফি কষা হয়ে যায়, কখনও বা কম ভেজালে সুগন্ধ বা ‘অ্যারোমা’ সে ভাবে পাওয়া যায় না। ‘নিজের কোনটা পছন্দ হবে, সেটা বুঝে নিতে একটু সময় লাগে। দীর্ঘ দিন এই যন্ত্রে কফি বানাতে বানাতে পছন্দের স্বাদটা খুঁজে পাওয়া যায়,’ বলছেন তিনি।
ফ্রেঞ্চ প্রেস যন্ত্রে কফি তৈরির নিয়ম:
প্রথমে যন্ত্রের কাচের পাত্রে কফিবিনের গুঁড়ো দিতে হবে। জন প্রতি ১ থেকে দেড় চা চামচ কফি যথেষ্ট।
ফুটন্ত পানির উপরে ঢেলে পাত্র ভর্তি করতে হবে।
উপর থেকে জাল লাগানো ঢাকনা আটকে দিতে হবে।
মিনিট দশেক কফি ভিজিয়ে রাখলেই হবে। তার পরে ঢেলে নিতে হবে কাপে।
তবে ফ্রেঞ্চ প্রেসে শুধু যে কফি বানানো যায়, তা নয়। অনেকে এতে চা-ও বানাতে পারেন। চা পাতা এতে ভিজিয়ে রাখা এবং তা থেকে সহজেই ছেঁকে চা বার করে নেওয়া যায়।
সূত্র: আনন্দবাজার