দেশজুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। ভয়াবহ এই প্রকোপ থেকে বাঁচতে বর্তমানে সবচেয়ে বেশি জরুরি সচেতনতা। সেই সঙ্গে যেসব স্থানে মশা জন্মানোর সম্ভাবনা আছে সেসব স্থান পরিষ্কার করে নেওয়া প্রয়োজন। মশা জন্মানোর জন্য উপযুক্ত স্থানসমূহ যেমন- ঘরের কোনা, আঙিনায় জমে থাকা ময়লা ধুলা, পাত্রে জমে থাকা পানি এসব কিছু পরিষ্কার রাখতে হবে।
ঘর থেকে মশা তাড়াতে ঘরোয়া কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-
পুদিনা পাতা : মশা তাড়াতে পুদিনা পাতা বেশ কার্যকরী। একটি গ্লাসে অল্প পানি নিয়ে তাতে পুদিনার কয়েকটি পাতা রেখে দিন। অবশ্যই তিনদিন পরপর পানি বদলে দেবেন। এছাড়া পুদিনা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানির গন্ধ পুরো ঘরে ছড়িয়ে দিন। এতেও মশা দ্রুত পালাবে।
সন্ধ্যায় হলুদ বাতি : পতঙ্গ সাধারণত আলোর প্রতি আকৃষ্ট হয়। ঘরে হলুদ আলো জেলে দিলে মশার উপদ্রব কমে যায়। বৈদ্যুতিক বাতির চারপাশে হলুদ সেলোফন জড়িয়ে দিতে পারেন, যেখানে আলোর রং অবশ্যই হলুদ হতে হবে। প্রতি সন্ধ্যায় জ্বালানো হলুদ আলো মশা তাড়াতে সাহায্য করবে।
শুকনো চা পাতা পোড়ানো : চা পাতা মশার উপদ্রব কমাতে পারে। সেজন্য চা পাতা ব্যবহারের পর ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন তাতে পানি না থাকে। এরপর এই চা পাতা ব্যবহার করতে পারেন ধুয়া হিসেবে। শুকনো চা পাতা পোড়ালে ঘরের সব মশা-মাছি দ্রুত দূর হবে।
লেবু ও লবঙ্গ ব্যবহার : প্রথমে একটি বড় লেবু নিয়ে দুই ভাগ করে কেটে এর ভেতরের অংশে অনেকগুলো লবঙ্গ গেঁথে নিন। লবঙ্গের শুধুমাত্র ফুলের অংশটুকু বের হয়ে থাকবে। বাকি অংশের পুরোটাই লেবুর ভেতরে গেঁথে দিন। পরে লেবুর টুকরোগুলো একটি পরিষ্কার থালায় নিয়ে ঘরের এককোণে রেখে দিন। এতে খুব সহজেই মশা তাড়াতে পারবেন। লেবু ও লবঙ্গ এভাবে রেখে দিতে পারেন জানালার গ্রিলেও। তাহলে মশা ভেতরে ঢুকবে না।
নিম পাতার তেল: মশা বা কীট-পতঙ্গ থেকে বাঁচতে নিম পাতার তেল ব্যবহার বেশ কার্যকর। কারণ, নিম পাতার তেল প্রাকৃতিক মশা নিরধোক সমৃদ্ধ।
রসুন দিয়ে বানানো স্প্রে : রসুন পোকা-মাকড় দমনে বেশ কার্যকরী। রসুনের স্প্রে খুব সহজেই বাড়িতে বানিয়ে নিতে পারেন। রসুনের কয়েকটি কোয়া ছেঁচে নিয়ে ১ কাপ বা আধা কাপ পানিতে ফুটান। তারপর তৈরি মিশ্রণটি একটি বোতলে নিয়ে দরজা, জানালা, ঘরের চারিদিকে স্প্রে করুন।
কর্পূর ব্যবহার : কর্পূরের গন্ধ মশা সহ্য করতে পারে না। ৫০ গ্রাম কর্পূরের একটি ট্যাবলেট একটি ছোট বাটিতে রেখে বাটিটি পানি দিয়ে ভরে ঘরের কোণে রেখে দিন। সাথে সাথেই দেখবেন, মশা গায়েব হয়ে গেছে। প্রতি দুই দিন পর পর পানি পরিবর্তন করে দিতে ভুলবেন না।
এসব পক্ষেপগুলো নেওয়ার পাশাপাশি মশার উপদ্রব থেকে বাঁচতে সচেতনতা প্রয়োজন। বিশেষ করে এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে বাড়ির আশেপাশে জমে থাকা পানি পরিষ্কার করা জরুরি। বাড়ির আঙ্গিনায় আগাছা, ঝোপ-ঝাড় জমতে দেবেন না। ময়লা ফেলার পাত্র ঢাকনাযুক্ত রাখুন এবং নিয়মিত পরিষ্কার করুন। বাড়ির দরজা ও জানালায় নেট লাগিয়ে মশার উপদ্রব থেকে দূরে থাকতে পারেন।