কোনোকিছু কিনতে গেলে প্রথমেই কি আপনি দেখেন মেয়াদটা শেষ হচ্ছে কবে? জি, হ্যাঁ! আপনি হয়তো এখনো চারপাশের বহু মানুষের পূর্ব ধারণা নিয়েই আপনার জীবন উপভোগ করছেন। অনেকের মতোই ভুল ধারণার মধ্যেই রয়ে গেছেন।
হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন। পণ্যের মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ এবং সে তারিখ পার হয়ে যাবার পরেও পণ্য বা খাবারের মান ভালো খারাপের ব্যাপারে আপনার ভাবনার শেকলটাকে গুড়িয়ে দিতে চইি আমরা । আপনার ভেতরে দীর্ঘকাল ধরে জেঁকে থাকা ধারণাগুলিতে খানিক ভিন্ন ( এক নতুন মাত্রিক দৃষ্টান্ত ) যোগ করতেই এসেছি আমরা।
এবার তাহলে দেখা যাক, ইউ এস ডি এ এই ব্যাপারে কি বলে। ইউ এস ডি এ বলছে , এই ধরনের তারিখগুলো অগত্যাই প্রয়োজনীয় নয়। এবং এমনকি পচনশীল পণ্য কিংবা খাদ্যদ্রব্যাদিও গায়ে থাকা প্যাকেজিংয়ের লেবেলে উল্লেখিত তারিখ অনুযায়ী মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখের পরেও তুলনামূলকভাবে নিরাপদ।
এই তারিখটা আদতে ” পণ্যের সর্বোত্তম অবস্থার” তারিখ। অর্থাৎ, পণ্য উৎপাদনের সময় হতে কতো থেকে কতো তারিখের মধ্যে পণ্যটি ব্যবহারে কিংবা খাদ্যদ্রব্যটি গ্রহণের জন্য সর্বোত্তম। বিশদভাবে বলতে গেলে, তারিখের এ লেবেলিং মূলত নির্দেশ করে, কোন মেয়াদটি হতে পারে ভোক্তাদের পণ্যটি কেনার জন্য যথোপযুক্ত সময়। এবং বাস্তবিক অর্থে শিশুদের সংশ্লিষ্ট কোনো পণ্য বা খাদ্যদ্রব্য ব্যতীত এসব ম্যানূফ্যাকচারিং লেবেলিং এর কোনো ভিত্তি নেই। এই কথা কিন্তু আমরা বলছিনা, বলছে ইউ এস ডি এ ।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে, ইউ এস ডি এ এসব বলার কে! মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এতোটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। ঠিকঠাকভাবে সংরক্ষণ করা গেলে , সঠিক পরিবেশে রাখতে পারলে এবং সঠিক হাতে পরিচালনা করা গেলে মেয়াদোত্তীর্ণের পরেও খাদ্যদ্রব্যাদি কিংবা পণ্য ভালো থাকে। কিন্তু কথা হচ্ছে, এসব বলার ইউ এস ডি এ কে?
আসুন, এবার তবে জানা যাক, ইউ এস ডি এ কারা? ইউ এস ডি এ হচ্ছে ” ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ অ্যাগ্রিকালচার”। এবং তাদেও খাদ্য সুরক্ষা ও পরিদর্শন বিভাগই এমন যুগান্তকারী এক গোপনীয়তা প্রকাশ কওে দিয়েছে।
এবং পৃষ্ঠের নিচে রহস্য এটাই যে, উৎপাদনকারীরা এসব ডেট লেবেলিং আসলে করে পণ্যটি কখন কিনলে তা আমাদের জীবনে সর্বোচ্চ মূল্য যোগ করবে এবং সর্বোৎকৃষ্ট মানেই ভোক্তা তা গ্রহণ করতে পারবে , সে ও সিদ্ধান্ত নিতে।
উল্লেখ্য, শিশু সংশ্লিষ্ট কোনো পণ্য বা খাদ্যদ্রব্য ব্যতীত, খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই, ফেডারেল আইন অনুযায়ী ”ডেইট লেবেলিং আবশ্যক নয়।
বাংলাদেশেও বিভিন্ন সুপারশপে মাংস, পোল্ট্রি, ডিম এবং দুগ্ধজাত পণ্যসহ বেশিরভাগ খাবারে ”ডেইট লেবেলিং” এর দেখা মেলে। ডেইট লেবেলিং এর ক্ষেত্রে যে বাক্যাংশগুলো সর্বাধিক ব্যবহ্রত হয়, তস্মধ্যে উল্লেখযোগ্য,
” সর্বোত্তম যদি ব্যবহার করা যায় / হয়” ; ”এই তারিখের মধ্যে ক্রয়/ বিক্রয় উত্তম”, ”ইউজ বাই”, ”ফ্রিজ বাই”, ”ঠান্ডায় সংরক্ষণ করুন” ইত্যাদি।
যাই হোক, এফ এস আই এস পণ্যের প্যাকেজিংয়ে ”ডেইট লেবেলিং” নিশ্চিতকালীন/ করণের সময়ে প্রস্তুতকারক এবং খুচরা বিক্রেতাদেরকে ” ব্যবহার করলে সর্বোত্তম” শব্দটিই ব্যবহারের পরামর্শ দেয়।
তারপরেও আপনার মনে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে পারে, মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পেরিয়ে যাবার পরেও কোনও খাবার খাওয়া কিংবা কোনও পণ্যের ব্যবহার কি নিরাপদ? ”শুধুমাত্র শিশু সূত্রীয় কোনো পণ্য বা খাদ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রে উত্তরটা হবে ”না”। শুধুমাত্র এক্ষেত্রেই মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখ পেরিয়ে যাবার পরেও খাওয়া বা ব্যবহার করা যাবে সূত্রটি প্রযোজ্য নহে। এবং এছাড়া পণ্যগুলি যদি নিখুঁতভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা যায় , তবে ইউ এস ডি এর দাবি অনুযায়ী, পণ্যগুলি আজীবন ও নিরাপদ থাকতে পারে।
তবে সাধু সাবধান! কোনোক্রমেই যদি কোনো খাবার বা পণ্যে পচন শুরু হয়েছে মনে হয়, বিন্দুমাত্র দ্বিধা না করে ফেলে দিন। না খাবেন, না শরীওে ব্যবহার করবেন। সে যাই হোক, তবুও পচন শুরুর আগ পর্যন্ত আপনার খাবার অথবা পণ্য নিরাপদ। শেষ কথা এটাই।
আরও বিস্তারিত জানতে কিংবা আরও কোনো প্রশ্ন থাকলে, সঙ্গেই থাকুন আমাদের এবং অপেক্ষা করুন পরবর্তী পর্বের। সে পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!