পৃথিবীতে অন্তত ১২ শতাংশ মানুষ থাইরয়েডজনীত সমস্যায় ভোগেন। থাইরয়েডের সমস্যা অত্যন্ত সাধারণ এবং পরিচিত একটি রোগ। বেশির ভাগ সময়ে মহিলারা বেশি আক্রান্ত হলেও মহিলা-পুরুষ নির্বিশেষে থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা বহু মানুষের শরীরে দেখা দেয়। সহজ করে বলতে গেলে, থাইরয়েড গ্রন্থি যেই থাইরয়েড হরমোনের সৃষ্টি করে, তার মাত্রা প্রয়োজনের থেকে বেশি বা কম হওয়াতেই এই সমস্যাগুলি দেখা দেয়।
থাইরয়েড হরমোন মূলত বিপাকের ক্ষেত্রে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশের গঠনের জন্য গুরুত্ত্বপূর্ণ। কিন্তু এই হরমোনের মাত্রা শরীরে অত্যধিক বেশি বা কম হয়ে গেলে তা বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করে।
আপনার শরীরে থাইরয়েডের সমস্যা দেখা দিয়েছে কী না, জানার জন্য এই আটটি লক্ষণের দিকে নজর রাখুন। এই শারীরিক বা মানসিক লক্ষণগুলি দেখা দিলে আপনার তাড়াতাড়ি সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত।
ক্লান্তি
থাইরয়েডের সব থেকে সাধারণ লক্ষণ হচ্ছে ক্লান্তি। থাইরয়েড হরমোন মূলত শরীরে শক্তি জোগান দেয়। আপনি যদি অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন, তাহলে তা থাইরয়েড হওয়ার লক্ষণ হতেই পারে।
ওজন বেড়ে যাওয়া
অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়াও থাইরয়েডের লক্ষণ হতে পারে। শরীরের বিপাকের মাত্রা যদি কমে যায় বা বেড়ে যায়, তার সঙ্গে আপনার শরীর কতটা ক্যালরি বা ফ্যাটের মাত্রার হেরফের হওয়া খুবই স্বাভাবিক, যার ছাপ আপনার ওজনে পড়তে বাধ্য।
অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগা
বেশি শীত না পড়লেও যদি আপনার খুব সহজেই ঠান্ডা লাগে, তার মানে আপনার শরীর যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালরি ঝরাচ্ছে না। বরং আপনার শরীর ক্যালরি সঞ্চয় করে রাখছে। যা থাইরয়েড হওয়ার লক্ষণ হিসেবে ধরা যেতে পারে।
পেশী এবং জয়েন্টে দুর্বলতা ও যন্ত্রনা
বিপাকের সমস্যার কারণে আপনার পেশির এবং জয়েন্টের শক্তির ক্ষয় হতে পারে। যার ফলে আপনার পেশী বা জয়েন্ট দুর্বল হয়ে যেতেই পারে।
চুল পড়া
থাইরয়েডের সমস্যা হলে আপনার চুল ঝরা বেড়ে যেতে পারে। চুলের গোড়া দুর্বল হয়ে যাওয়ার জন্য অনেক ক্ষেত্রেই থাইরয়েডজনীত সমস্যা দায়ী।
অবসন্নতা
বিভিন্ন সমীক্ষা অনুযায়ী বেশির ভাগ মানুষ যাঁরা থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরা অবসাদের কবলে পড়ে যেতে পারেন।
মনোযোগ দিতে না পারা এবং ভুলে যাওয়া
থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছেন এমন অনেকেই মানসিক ক্লান্তির কথা বলেন। মনোযোগ দিতে না পারা, বা সহজেই কোন কথা ভুলে যাওয়া, এগুলি থাইরয়েডের ক্ষেত্রে অত্যন্ত পরিচিত লক্ষণ।
ঋতুস্রাবের সমস্যা
শরীরের অন্যান্য হরমোনের সঙ্গে থাইরয়েড হরমোনের সম্পর্ক থাকায়, সেই হরমোনের বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া অন্যান্য হরমোনের কার্যকারিতাকেও প্রভাবিত করতে পারে। ঋতুস্রাব জড়িত হরমোনের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। যার ফলে ঋতুস্রাবের সময় এবং তীব্রতায় সমস্যা হতে পারে।