ডিসেম্বর ১, ২০২৩, ০১:১৭ পিএম
বড় চুল পছন্দ নয় এমন মানুষ খুব কম রয়েছে। এক সময় নারীদের লম্বা চুলের বেশ সামাজিক কদর থাকলেও কিন্তু এখন তা আগের মতো নেই। তারপরও এখনও অনেক নারী চুল লম্বা করেন। অনেকের ইচ্ছে থাকে চুল এমন বড় হবে যে সবার নজর কাড়বে ।
ভারতের উত্তরপ্রদেশের ৪৬ বছর বয়সি স্মিতা শ্রীবাস্তবেরও তাই ইচ্ছেই ছিল। সেকারণে তিনি চুলও বড় করেছেন বেশ। দেখতে দেখতে সেই চুল ছাড়িয়ে গিয়েছে কোমর। ছাড়িয়ে গিয়েছে পা। অবশেষে তা ছাড়িয়ে গেল বিশ্বের সবাইকে। অর্থাৎ তাঁর চুলই বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুল। এবার তারই স্বীকৃতি দিল গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।
বিশ্বের সবচেয়ে লম্বা চুল রয়েছে বলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের খেতাব অর্জন করেন স্মিতা শ্রীবাস্তব। ৭ ফুট ৯ ইঞ্চি লম্বা চুলের জন্য বিশ্বের সবাইকে পেছনে ফেলেছেন ৪৬ বছর বয়সী এই নারী।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস জানায়, চুল এত লম্বা করতে রীতিমতো সাধনাই করতে হয়েছে তাঁকে। ১৪ বছর বয়স থেকেই চুল কাটা বন্ধ করে দেন স্মিতা। সে হিসাবে ২৮ বছরের সাধনায় এই চুলের অধিকারিণী হয়েছেন তিনি। আর চুল লম্বা করার জন্য মায়ের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বলে জানান স্মিতা। লম্বা চুলের জিনগত বৈশিষ্ট্য মায়ের কাছ থেকেই পেয়েছেন তিনি।
আশির দশকের ভারতীয় অভিনেত্রীদের দীঘল সুন্দর চুল দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছেন তিনি। স্মিতা বলেন, ‘ভারতীয় সংস্কৃতিতে দেবীদের ঐতিহ্যগতভাবেই অনেক লম্বা চুল ছিল। আমাদের সমাজে চুল কাটাকে অশুভ বলে মনে করা হয়। তাই নারীরা চুল লম্বা হতে দিতেন। আর লম্বা চুল নারীদের সৌন্দর্য বাড়ায়।’
স্মিতা কীভাবে চুলের যত্ন নেন, সে বিষয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, সপ্তাহে দুবার চুল ধোয়ার অভ্যাস স্মিতার। চুল ধোয়া থেকে শুকানো, জট ছাড়াতে এবং বিশেষ উপায়ে বাঁধতে কমপক্ষে তিন ঘণ্টা সময় লাগে তাঁর।
কেবল চুল ধুতেই তাঁর লেগে যায় ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট। এরপর তোয়ালে দিয়ে চুল শুকান তিনি। বাকি কাজ করতে লেগে যায় আরও দুই ঘণ্টা।
নিজের ঝরে পড়া চুলও সংগ্রহ করেন স্মিতা। একবার হঠাৎ তাঁর চুল পড়া বেড়ে গেলে শুরু করেন চুল সংগ্রহ করা। সেই ঘটনারও প্রায় ২০ বছর হয়ে গেছে। এ ছাড়া, দ্বিতীয় সন্তানের জন্মের সময় চুল ছেঁটেছিলেন স্মিতা। তখন চুল ছিল ৬ ফুট লম্বা।
স্মিতা বলেন, ‘মানুষ আমার কাছে আসে, আমার চুল স্পর্শ করে, ছবি তোলে, আমার সাথে সেলফি তোলে। আমার চুল সুন্দর বলে কী ব্যবহার করি তা জানতে চায়। আমিও তাদের পরিচর্যা সম্পর্কে বলি।’
স্মিতা আরও বলেন, ‘গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠায় দারুণ আনন্দিত হয়েছি আমি । এই স্বপ্ন আমি দেখতাম। ঈশ্বর আমার প্রার্থনা শুনেছেন। আমি যতক্ষণ পারি চুলের যত্ন নেব। আমি কখনোই আমার চুল কাটব না। কারণ, এই চুলই আমার জীবন। আমি চাই আমার চুল আরও বাড়ুক।’