নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত, ‘অভিজ্ঞতা’ নিতে আর ‘ঝামেলা’ এড়াতে

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ১৩, ২০২৫, ০৫:৫৩ পিএম

নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াত, ‘অভিজ্ঞতা’ নিতে আর ‘ঝামেলা’ এড়াতে

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন প্রশ্নে আগামী মাসেই গণভোট করার পক্ষে নির্বাচন কমিশনের কাছে নানা যুক্তি তুলে ধরেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

এর মধ্যে একটি যুক্তি হলো, সংসদ নির্বাচনের জন্য অভিজ্ঞতা নিতেও নভেম্বরে গণভোট করা যেত পারে।

আরেকটি যুক্তিতে দলটি বলছে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে ঝামেলা হলে ‘আম ছালা দুটোই’ হারানোর আশঙ্কা রয়েছে।

সোমবার, ১৩ অক্টোবর বিকালে ইসির সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টা বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে এসব যুক্তি তুলে ধরেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের।

এদিন দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসে জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনসহ চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকের পর ব্রিফিংয়ে এসে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোট প্রক্রিয়া, ভোটার তালিকা ও এনআইডি, পিআর পদ্ধতি, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও গণভোট আয়োজন নিয়ে দলের অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে বৈঠকে।

আগামী বছর রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে।

এরইমধ্যে জুলাই সনদ নিয়ে গণভোট আয়োজনের বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে দলগুলোর সম্মতি দিয়েছে। কিন্তু সেই গণভোট কবে হবে, তা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধ তৈরি হয়েছে।

জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি দল বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট আয়োজন করা হোক। অন্যদিকে সংসদ নির্বাচনের দিনেই আলাদা ব্যালটে গণভোট আয়োজনের কথা বলছে বিএনপিসহ কয়েকটি দল।

এমন প্রেক্ষাপটে ইসির সঙ্গে বৈঠক করল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।

ব্রিফিংয়ে তাহের বলেন, “আমরা অবশ্যই গণভোট (সংসদ নির্বাচনের) আগে চাচ্ছি; আমরা নভেম্বরে গণভোট করার জন্য বলে আসছি। আমাদের অতীতে অনেক গণভোট হয়েছে এবং সেখানে দেখা গেছে যে, ২১ দিনের ব্যবধানেও গণভোট হয়েছে, ১০ দিনেও হয়েছে, ১৭ দিনেও হয়েছে।”

তিনি বলেন, “আমাদের কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচন করতে গিয়ে যদি ঝামেলা হয়ে যায়, তাইলে গণভোট আবার অনিশ্চিত হয়ে যাবে। তো এই নির্বাচনে যদি ঝামেলা হয়, তাহলে আম ছালা দুটোই যাবে। এজন্য আমরা মনে করি, একটা সহজতর নির্বাচন (গণভোট), যাতে আমরা এখানে অভিজ্ঞতা নিতে পারি। এক্সপেরিমেন্ট নিতে পারে যে, কীভাবে পুলিশ সহযোগিতা করে।”

আবু তাহেরের মতে, গণভোট তো খুবই সাধারণ একটা নির্বাচন। এখানে খুব বড় ধরনের কোনো খরচ নাই।

“যে বাক্স আপনি গণভোটের জন্য কিনবেন, ওই বাক্স দিয়েই গণভোট করা যাবে। শুধু খরচ বাড়তি হচ্ছে একটা ব্যালট ও কালি। এছাড়া যারা ইনভলভ হবেন, তাদের ভাড়াটারা, খাওয়ার জন্য কিছু লাগবে।এর বাইরে তেমন কোন খরচ নাই।”

একসঙ্গে গণভোট হলে তেমন সাড়া পাওয়া যাবে না বলেও মনে করেন জামায়াত নেতা।

নায়েবে আমির জানান, “জাতীয় নির্বাচনে সব দল ব্যস্ত থাকবে। নির্বাচনের কনসার্ন থাকবে সবাই। দেখা যাবে গ্রামের সাধারণ ভোটাররা ধানের শীষ বা দাঁড়ি পাল্লায় ভোট দিয়ে ওই কাগজটা (গণভোটের) পকেটে নিয়ে বাড়ি চলে যাচ্ছে।

“কারণ তাকে আরেকটা ভোট দেওয়ার চাপাচাপিটা কে করবে? আমি তো ততক্ষণ আরেকটা ভোটের জন্য দৌঁড়াব। সে কারণে যেটা বলা হচ্ছে, জাতীয় নির্বাচন আর গণভোট আলাদা করতে হবে।”

গণভোটের বিষয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে, তা বাস্তবায়ন করার বিষয়ে নির্বাচন কমিশন আশ্বস্ত করেছে বলে জানান জামায়াতের এ নেতা।

তিনি বলেন, “ইসি আমাদের জানিয়েছে, সরকার যদি সিদ্ধান্ত নেয়, তারা এটা বাস্তবায়ন করবেন। সেখানে ইসির কোনো সমস্যা হবে না।”

আব্দুল্লাহ তাহেরের নেতৃত্বে জামায়াতের প্রতিনিধি দলে ছিলেন এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ, জসিম উদ্দিন সরকার ও মতিউর রহমান আকন্দ।

Link copied!