উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক ও সমাজ সংস্কারক প্রিন্সিপাল ইবরাহীম খাঁর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৯ মার্চ। ১৯৭৮ সালের এই দিনে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন তিনি।
সাহিত্যিক ইব্রাহীম খাঁর (১৮৯৪-১৯৭৮) জন্ম টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার তৎকালীন বিরামদী (বর্তমান নাম শাবাজনগর) গ্রামে। তিনি ‘প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁ’ নামেও পরিচিত। ১৯১২ সালে এন্ট্রান্স (প্রবেশিকা বা মাধ্যমিক) এবং ১৯১৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯১৯ সালে এমএ পাস করে শিক্ষকতা শুরু করেন। করটিয়ার জমিদারের আর্থিক সহযোগিতায় করটিয়া সাদ’ত কলেজ প্রতিষ্ঠিত হলে ইব্রাহীম খাঁ সেখানে প্রিন্সিপাল হিসেবে যোগ দেন।
ব্রিটিশ ভারতে মুসলমানদের করুণ অবস্থা প্রত্যক্ষ করে ইবরাহীম খাঁ কর্মজীবনের শুরুতেই অসহযোগ আন্দোলন এবং খেলাফত আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় মুসলিম মনে আত্মসম্মানবোধ জাগ্রত করার জন্য তিনি ইতিহাস, সমকালীন জীবন নিয়ে, ইসলামের গৌরবময় অধ্যায় নিয়ে লিখেছেন। ব্রিটিশ ভারতে অবহেলিত পণ্ডিতদেরকে তিনি তার কলেজে সুযোগ দিতেন। এমনকি অন্যত্র বহিষ্কৃত ছাত্ররাও তার আশ্রয়ে পড়াশোনার সুযোগ পেয়েছে।
ইবরাহীম খাঁ স্মৃতিকথা, শিক্ষা-সাহিত্য-ধর্ম-বিষয়ক প্রবন্ধ, নাটক, ভ্রমণ কাহিনী, রসরচনা, গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস ও জীবনচরিত, শিশু সাহিত্য, পাঠ্য বই ও অনুবাদ মিলিয়ে শতাধিক গ্রন্থ রচনা করেছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য বই হলো- কামাল পাশা (১৯২৭), আনোয়ার পাশা (১৯৩৯) ঋণ পরিশোধ (১৯৫৫), ইস্তাম্বুল যাত্রীর পত্র (১৯৫৪), বাতায়ন (১৯৬৭), ব্যাঘ্র মামা (১৯৫১)। বাংলাদেশের এই বরেণ্য সাহিত্যিককে পাকিস্তান আমলে ‘সিতারা-ই-ইমতিয়াজ’ এবং ব্রিটিশ আমলে ‘খান সাহেব’ ও ‘খান বাহাদুর’ উপাধি দেওয়া হয়। ১৯৬৩ সালে তিনি বাংলা একাডেমি পুরষ্কার ও ১৯৭৬ সালে একুশে পদক পান।