গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। তার গানে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ, দেশপ্রেম, প্রকৃতি, জীবনবোধ, প্রেম, বিরহ, স্নেহ, অনুভূতির কথা। এখন পর্যন্ত তার রচিত গানের সংখ্যা ২০ হাজারেরও বেশি।
১৯৬২-৬৩ সালে মেডিক্যাল কলেজে পড়ার সময় গাজী মাজহারুল আনোয়ারে লিখেছিলেন প্রথম গান ‘বুঝেছি মনের বনে রং লেগেছে’। গানটির সুর করেছিলেন নাজমূল হুদা বাচ্চু ও শিল্পী ছিলেন ফরিদা ইয়াসমিন। ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তানে গান লিখে ৫০ টাকা আয়ের মাধ্যমে পেশাদার গীতিকার হিসেবে জীবন শুরু করেন তিনি।১৯৬৫ সালে চলচ্চিত্রে যুক্ত হওয়ার পর গাজী মাজহারুল আনোয়ার চিত্রনাট্য, গান, সংলাপ ও কাহিনি রচনা শুরু করেন। বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই তার অবদান ছড়িয়ে আছে সংশ্লিষ্ট প্রতিটি অঙ্গনে।
২০০২ সালে একুশে পদক, ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদক, একাধিকবার বাচসাস পদকসহ অসংখ্য সম্মাননা রয়েছে তার ঝুলিতে। গীতিকার হিসেবে ৫ বার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বিবিসি’র জরিপে সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে তিনটি গানের রচয়িতা গুণী এই গীতিকবি। গানগুলো হচ্ছে- ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল’ ও ‘একবার যেতে দে না’।
এছাড়াও সুভাষ দত্তের ‘আয়না ও অবশিষ্ট’ চলচ্চিত্রে ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’ গানটি দিয়ে চলচ্চিত্রের গান লেখা শুরু করেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। তিনি একজন সফল কাহিনীকার, চিত্রনাট্যকার ও পরিচালকও। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান দেশ চিত্রকথা থেকে শাস্তি, স্বাধীন, শর্ত, সমর, শ্রদ্ধা, ক্ষুধা, স্নেহ, তপস্যা, উল্কা, আম্মা, পরাধীন, আর্তনাদ, পাষাণের প্রেম, এই যে দুনিয়া- নামের চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন।