বিয়ে করেছেন ভারতের কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক, গায়ক এ আর রাহমানের মেয়ে খাতিজা রহমান। বৃহস্পতিবার রাতে মেয়ের বিয়ের ছবি ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেন অস্কারজয়ী এই সংগীতশিল্পী। পারিবারিক সেই ছবিতে বিয়ের সাজে সোফায় বসে আছেন বর-কনে। পেছনে রাহমানের বড় মেয়ে রহিমা, স্ত্রী সায়রা বানু, এ আর রাহমান নিজে ও ছেলে আমিন। ছবি শেয়ার করে রাহমান লিখলেন, ‘সর্বশক্তিমান যেন এই দম্পতিকে আশীর্বাদে রাখেন। আপনাদের ভালোবাসা ও শুভেচ্ছার জন্য রইল অগ্রিম শুভেচ্ছা।’ ছবিতে এক পাশে একটি পোর্ট্রেট রাখা, ছবিটি এ আর রাহমানের প্রয়াত মায়ের।
এ আর রাহমান, খাতিজা ও খাতিজার বর রিয়াসদিন। ছবি: ইন্ডিয়া টুডে
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, এ আর রাহমানকন্যা খাতিজা রাহমান বিয়ে করেছেন অডিও ইঞ্জিনিয়ার প্রেমিক রিয়াসদিন শেখ মোহাম্মদকে। ছবিতে কনে সাজে থাকা এ আর রাহমানের কন্যা খাতিজাকে দেখা যায় অফ হোয়াইট রঙের এমব্রয়ডারি করা বোরকা পরা। গলায় মুক্তা ও দামি পাথরের কাজ করা লম্বা হার, মাথায় টিকা। নেকাবের আড়ালে তাঁর মুখ। পোশাকের সঙ্গে ম্যাচিং মাস্ক পরে দেখা গেল তাঁকে প্রতিটা ছবিতে। আর বর রিয়াস পরেছেন শেরওয়ানি। রিয়াসদিনের সঙ্গে একটা ছবি খাতিজা শেয়ার করে নিয়েছেন নিজের অ্যাকাউন্টেও। সেখানে লিখেছেন, ‘আমার জীবনের সবচেয়ে প্রতীক্ষিত একটা দিন। বিয়ে হলো আমার মনের মানুষ রিয়াসদিনের সঙ্গে।’
রাহমানকন্যা খাতিজাকে নিয়ে এর আগে বহু আলোচনা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই যুগে দাঁড়িয়ে বিশ্ববরেণ্য এই সুরকারের পরিবারের কোনো মেয়ে কেন বোরকা পরবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল একটা অংশ। মেয়েকে জোর করে নিকাব পরান সংগীত পরিচালক এ আর রাহমান! এ রকম অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগের জবাব দিয়েছেন অস্কারজয়ী এই সংগীতজ্ঞ।
এমনকি নেকাব পরা প্রসঙ্গে নিজের সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছেন রাহমানকন্যা। খাতিজা ও রাহমান দুজনই বিবৃতি দিয়ে জানান, এটা সম্পূর্ণভাবে খাতিজার নিজস্ব পছন্দ। এর পেছনে পরিবারের কোনো হাত নেই। বাবাকে আক্রান্ত হতে দেখে ফেসবুকে খাতিজা লিখেছেন, ‘আমি যে পোশাক পরি বা যা করতে পছন্দ করি, এর পেছনে আমার মা-বাবার কোনো হাত নেই। নিকাব আমার ব্যক্তিগত পছন্দ। আমি মনে করি, এটা সম্মানের ব্যাপার। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ হিসেবে নিজের পোশাক পছন্দ করার অধিকার আমার আছে।’
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই এনগেজমেন্ট হয় খাতিজা আর রিয়াসদিনের। সে সময় বাগদানের অনুষ্ঠানের একাধিক ছবি শেয়ার করে নিয়েছিলেন রাহমানকন্যা। গোলাপি ও রুপালি রঙের পোশাকে দেখা গিয়েছিল সে সময় তাঁকে।
১৯৯৬ সালের ২৮ জুলাই চেন্নাইয়ে জন্ম খাতিজার। রাহমানের মেয়ে হওয়ার সুবাদে ছোটবেলা কেটেছে সংগীতের আবহে। প্রথাগত পড়াশোনা শেষ করে সংগীতকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন খাতিজা। জানিয়েছেন, ছোট থেকে বাবার সঙ্গে কাজ করাটা তাঁর স্বপ্ন ছিল।
পেশাদার শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ মাত্র ১৪ বছর বয়সে। ২০১০ সালে রজনীকান্ত এবং ঐশ্বরিয়া রাইয়ের ‘এন্থিরান’ ছবির জন্য এস পি বালসুব্রহ্মণ্যমের সঙ্গে গেয়েছিল খাতিজা। রাহমানের সুরে সে গানেই নিজেকে চিনিয়েছিলেন সেই সময়ের কিশোরী খাতিজা। পার্শ্বগায়িকা হিসেবে নজরকাড়া পারফরম্যান্সের পর আবার বাবার সঙ্গে কাজের সুযোগ এসেছিল। ২০১৯ সালে মুম্বাইয়ে ইউ ২-এর কনসার্টে পারফর্ম করেছিলেন খাতিজা। গেল বছর কৃতি শ্যাননের ‘মিমি’-র জন্য গান গেয়েছেন তিনি। নেটফ্লিক্সে সে ছবির ‘রক আ বাই বেবি’ গানটি অনেকেরই বাহ্বা কুড়িয়েছে। আর অন্য দিকে, রিয়াস তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। রিয়াসদীন এ আর রাহমান লাইভের একজন সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার। বর–কনে দুজনের জন্মই চেন্নাইয়ে।