না ফেরার দেশে চলে গেলেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং গবেষক সাজেদুল আউয়াল। ‘ছিটকিনি’ খ্যাত এই নির্মাতা করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। এরপর থেকে সৃষ্ট বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় মারা যান তিনি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাজেদুল আউয়ালের ছেলে ইশরাত শামীম অনন্ত।
একজন নির্মাতার পাশাপাশি সাজেদুল আউয়াল ছিলেন চলচ্চিত্রবিষয়ক লেখক, গবেষক ও শিক্ষক। করোনায় আক্রান্ত হয়ে তার শারীরিক জটিলতা বেড়ে যাওয়ায় গতকাল বৃহস্পতিবার নিজ বাসায় মৃত্যু বরণ করেন তিনি। মৃত্যুর সময়ে তার বয়স ছিল ৬৩ বছর। নির্মাতা সাজেদুলের মৃত্যুর বিষয়টি জানিয়ে তার ছেলে বলেন, ‘বাবা গত মাসে করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। পরে তার করোনা পরীক্ষার রেজাল্ট নেগেটিভ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। এরপর কিছুটা ভালো ছিলেন। আজকে সন্ধ্যার পর হঠাৎ করেই বলছিলেন, খারাপ লাগছে। কিছুক্ষণের মধ্যে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায়। তখন অ্যাম্বুলেন্স কল করি। কিন্তু আধা ঘণ্টার মধ্যে তিনি মারা যান। তাকে হাসপাতালে আর নিতে পারিনি।’
প্রসঙ্গত, সাজেদুল আউয়াল স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ের নাট্যচর্চায় উল্লেখযোগ্য নাম। তিনি ১৯৫৮ সালের ২৫ মার্চ কুমিল্লায় জন্মগ্রহন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি ঢাকা থিয়েটারে যোগ দেন। ‘ঢাকা থিয়েটার’-এর সঙ্গে দীর্ঘ দিন সম্পৃক্ত ছিলেন। তার রচিত প্রথম কাব্যনাটক ‘ফণিমনসা’। ১৯৮০ সালে নাটকটি মঞ্চায়নকালে যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। ১৯৭৪ সালে চলচ্চিত্র সংসদ আন্দোলেনর সঙ্গে যোগ দেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাজ করেন ‘সিনে আর্ট সার্কেল’ এ।
এদিকে চলচ্চিত্র নির্মাণে তার সূচনা ১৯৯৯ সালে স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নির্ভানা’র মধ্য দিয়ে। এরপর দীর্ঘ সময় নিয়েছেন প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের কাহিনিচিত্র নির্মাণে। ২০১৭ সালের ১ ডিসেম্বর মুক্তি পায় সাজেদুল আউয়াল পরিচালিত ছবি 'ছিটকিনি'। এখানে অভিনয় করেছেন রুনা খান, ভাস্কর বন্দোপাধ্যায়সহ আরও অনেকে। এই সিনেমায় অভিনয় করে শিশুশিল্পী আপন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার পায়। আর মেরিল প্রথম আলো ‘সমালোচক পুরস্কার (চলচ্চিত্র)’ ক্যাটাগরিতে সেরা অভিনেত্রী হন রুনা খান। এছাড়াও সাজেদুল আউয়াল স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগ এবং বাংলাদেশ সিনেমা ও টেলিভিশন ইন্সটিটিউটে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত ছিলেন ।