ফারুকীর বিজ্ঞাপনচিত্রে সারোয়ার মুনসুরের গান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

নভেম্বর ২১, ২০২১, ০৫:২৯ এএম

ফারুকীর বিজ্ঞাপনচিত্রে সারোয়ার মুনসুরের গান

বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী পরিচালিত "আমার বাংলাদেশ" বিজ্ঞাপনচিত্রে ডাক পেয়েছেন সরোয়ার মুনসুর। সরোয়ার মুনসুরের লেখা ও সুর করা "মায়াগো কাইন্দো না" গানটির অংশ বিশেষ ব্যবহার করা হবে বিজ্ঞাপন চিত্রটিতে৷ স্কয়ার গ্রুপের প্রযোজনায় নির্মিতব্য ভ্রমন বিষয়ক বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংয়ে ইতোমধ্যে অংশগ্রহণ করেছে সম্প্রতি আলোচিত গান রচয়িতা সরোয়ার মুনসুর।

জানতে চাইলে শিল্পী সরোয়ার মুনসুর দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, আমার বাংলাদেশ নামক একটি বিজ্ঞাপনচিত্রে কাজ করেছি। প্রাথমিক চুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞাপনচিত্রটির শুটিং করেছি। আমার লেখা মায়াগো কাইন্দো না গানটির অংশবিশেষ ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছি। আমিতো গান নিয়েই কাজ করতে চাই। আমার লেখা গান এবং সুর মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আশারাখি ভূমিকা রাখবে এই কাজটি।  

গান রচনা আর গাইতে ভালবাসেন সরোয়ার মুনসুর। গানের ফেরিওয়ালা সরোয়ার নিজের গানে জীবন বাস্তবতার ছবি আঁকেন। নিজের রচিত গানে ও সুরে লৌকিক দরদ স্পষ্ট। সরোয়ারের ভাষায় লৌকিক শব্দে সহজেই মানুষকে নিজের কথা বোঝানো যায়। এই গুণী শিল্পী রচিত 'মায়াগো কাইন্দো না, আসমান বেইচা শাড়ি কিইনা দেম' গানটি ইতোমধ্যেই ভালবাসা কুড়িয়েছে অসংখ্য মানুষের। সরোয়ার মনসুরের জীবনের গল্প আর গান নিয়ে দ্য রিপোর্ট ডট লাইভের বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় নভেম্বর মাসের শুরুতে। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরেই সংগীতপ্রেমী নেটিজেনদের আলোচনার মধ্যমণি শিল্পী সরোয়ার। অনেক প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান এবং ব্যক্তি উদ্যোগে গান রেকর্ডিং-এর আগ্রহও প্রকাশ করেছেন।

আর্থিক অসংগতির কারণে এখনও কোন গান রেকর্ড করা সম্ভব হয়নি সরোয়ারের৷ কোন গান রেকর্ডিংয়ের জন্যে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনাদের প্রকাশিত রিপোর্টের পরে মুহূর্তের ভালবাসা আর আবেগে অনেকেই গান রেকর্ডিংয়ের প্রস্তাব দিয়েছে। আমিও চাই কিন্তু দয়া-দাক্ষিণ্যের আন্তরিকতার ভিতরে আমাকে ব্যবহার করে ব্যবসায়িক স্বার্থ হাসিল করতে চায় অনেকে।  আমিওতো আর্থিকভাবে সচ্ছল না ভাই। তাই চূড়ান্তভাবে কোন সুখবর দিতে পারছি না। সিদ্ধান্ত নিয়েছি নিজেই নিজের গান নিয়ে কাজ করবো। নিজের সন্তানের মতো গান নিয়েতো খামখেয়ালি করা যায়না। এর বাইরে কেই যদি সত্যিসত্যি আন্তরিক ভালবাসা নিয়ে আমার গান নিয়ে কাজ করতে চান আমি এক পায়ে দাঁড়িয়ে। তাই নিজের ফেসবুকে ক্রাউড ফান্ডিংয়ের স্ট্যাটাস দিয়েছি।

ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরদী থানার বারই গ্রামে ১৯৮৭ সালে জন্মগ্রহণ করেছে সরোয়ার। আবুল মুনসুর সরকার আর ফেরদৌসী বেগমের তিন ভাই-বোনের পরিবারে সরোয়ার দ্বিতীয়। পারিবারিক দারিদ্র্যের কারণে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। ২০২০ সালে জুন মাসে বিয়ে করেন এই শিল্পী। করোনা মহামারির সময়ে অ্যাড এজেন্সির চাকরি হারিয়ে আবার রিক্সা নিয়ে রাস্তায় নামেন জীবিকার তাগিদে। বর্তমানে পশ্চিম রামপুরার ওয়াব্দা রোডে স্ত্রীসহ বাস করছেন এই গুণী শিল্পী।

সরোয়ারের গান যেন প্রকৃতির মতো সহজ সুন্দর সুখ-দুঃখের উপাখ্যান। নির্ভেজাল মাটির মানুষের কথায় মাটির গন্ধ মাখা সুর। নিজের না বলা কথাগুলো এখন পর্যন্ত দুই থেকে আড়াইশো গান রচনা শুরু করলেও পূর্ণতা পেয়েছে পঞ্চাশের অধিক গান। নিজের শেকড়কে যেমন আগলে রেখেছেন আছে বিশ্ব সাহিত্য-সংগীতের সাথে নিবিড় যোগাযোগ। যার সাথে তুলনা করে নিজেকে যাচাই করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

কি অবস্থা জানতে চাইলে সরোয়ার মুনসুর জানান, রিক্সা চালাচ্ছি ভাই৷ বাড়িতে জমি দখল হয়ে আছে৷ ছোট ভাইকে দেয়া হয়েছে মামলা। এই নিয়াই যাচ্ছে আরকি।

এইদিকে অনুমতি ছাড়াই কতো জায়গায় যে আমার গান দেখতে পাচ্ছি। মনে হচ্ছে কয়দিন পরে নিজের গান প্রকাশ করতে গিয়া নিজেই কপি রাইট ক্লেইম খাইয়া বসবো। এই নিয়া আর কি বলবো তিনি প্রশ্ন রাখেন।

Link copied!