সারাজীবন আমি বয়স গুনি নাই, গুনছি ব্লেসিংস : মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ২, ২০২৩, ১০:০৯ পিএম

সারাজীবন আমি বয়স গুনি নাই, গুনছি ব্লেসিংস : মোস্তফা সরয়ার ফারুকী

মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, যাঁর নামের সাথে মিশে আছে অসংখ্য সফলতা। চলচ্চিত্র নির্মাণ অথবা নাট্য নির্মাণ— সব ক্ষেত্রেই রয়েছে তাঁর বিজয়ের গল্প। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে তিনি এক ভিন্নতার স্বাদ দিয়েছিলেন দর্শকদের। সবার প্রিয় গুণী এই নির্মাতার জন্মদিন ২ মে।

তবে বলতে বলতে তাঁর জীবনের যে হাফসেঞ্চুরি হয়ে গিয়েছে তা কখনো তিনি বুঝে উঠতে পারেননি। ১৯৭৩ সালের ২ মে রাজধানীর নাখালপাাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

Capture1

তাঁর জীবনের বিশেষ এই দিনকে স্মরণীয় করে রাখতে মধ্যরাতে ফারুকী তাঁর স্ত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে নিয়ে ঘরোয়াভাবে জন্মদিনের কেক কাটেন। প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তিনি তাঁর ফেসবুকের ভেরিফায়েড পেজে এক পোস্টে লেখেন:

‘সারাজীবন আমি বয়স গুনি নাই, গুনছি ব্লেসিংস! আজকে আমার ৫০তম জন্মদিনে এসে তাই পেছন ফিরে নিজেকে একজন কৃতজ্ঞ মানুষই মনে হচ্ছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞ, পৃথিবী নামের এই গ্রহে এক চমৎকার জার্নির জন্য আমাকে নির্বাচিত করার জন্য। 

ফারুকী আরও লিখেন, ‘আমার জার্নিটা অন্য আরও কোটি রকম হতে পারতো! হতে পারতাম কীর্তনখোলা নদীর পারের এক উদাসী রাখাল। কিংবা যাত্রা প্যান্ডেলের টিকিট চেকার। অথবা কোনো এক নির্জন স্কটিশ গ্রামের পাইপার। এর কোনোটাই ভালো বা খারাপ বলছি না। বলছি এই যে বাংলাদেশের একজন গল্পকথক হইছি, হয়ে আমার সময়টাকে গল্পে ধরার চেষ্টা করছি, করতে গিয়ে কতো মানুষের ভালোবাসা পাইছি, কতো মানুষের সাথে কতো ব্রিজ তৈরি করছি, এইসবই একেকটা ব্লেসিংস।’

নিজের প্রাপ্তির প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে এই নির্মাতা লেখেন, ‘তিশার মতো একজন সঙ্গী পাইছি এই জার্নিতে, ইলহামের মতো একটা বেহেশতের টুকরা পাইছি। আমি তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করবো? আজকে পিছনে ফিরে ভাবি, আমি যখন ছবি বানাতে শুরু করি, তখন যেসব রাস্তায় আমি হাঁটা ধরছিলাম, আমি তো পথ হারায়ে ঝরে যেতে পারতাম আরও এক স্বপ্নবান তরুণ হিসেবে। কতো ঝড় গেছিলো, ভাষার ঝড়, অভিনয়ের ঝড়, এমনকি বিষয়ের ঝড়ও। আজকের সময়ে বসে হয়তো বোঝা যাবে না একসময় ন্যাচারাল অভিনয় করাতে চাওয়াটা কতো ‘আনন্যাচারাল’ ছিল, স্বাভাবিক সংলাপ লেখাটাও কত বড় অপরাধ ছিল!

আজকের বাংলাদেশি ভিজুয়াল ল্যান্ডস্কেপের দিকে তাকালে সেই সব দিন অবিশ্বাস্যই মনে হয়।’ ফিফটিতে নতুন ভূমিকায়ও মেলে ধরার আশাবাদ ব্যক্ত করে ফারুকী লেখেন, ‘হয়তো করা যেতো আরও অনেক কিছুই, আরও অনেক বেটার কিছু, কিন্তু আজকের এই দিনে এসে অপ্রাপ্তির দিকে তাকাইতে চাই না। কারণ যখনই গুনতে বসবেন, জীবনে প্রাপ্তির চেয়ে অপ্রাপ্তি বেশীই হবে। গুনতে চাই তাই ব্লেসিংস! জীবনের দুই-তৃতীয়াংশ পার করে দিয়েছি!

ট্রেন যতদূর যাবে, চাইবো সেটা যেন মিনিংফুল জার্নি হয় আরও। নতুন নতুন গল্পে দেখতে চাইবো সময়টাকে! আর হ্যাঁ, এমনও হইতে পারে, ছবি বানানোর পাশাপাশি দেখতে পারেন নতুন কোনো ভূমিকায়ও। কারণ জীবন শুরু হতে পারে ফিফটিতেও।’ ‘সবাই ভালো থাকবেন। ভালোবাসবেন সবাইকে। গভীরে নামলে দেখবেন, মানুষে মানুষে ঘৃণার আসলে কোনো গভীর কারণই নাই। আমাদের এইসব পার্থক্য সব ওপরের, সকলই কসমেটিক’, বলে স্ট্যাটাসে উল্লেখ করেন এই নির্মাতা।

গুণী এই নির্মাতার পিঁপড়া বিদ্যা, ডুব, ব্যাচেলর, টেলিভিশন, মেড ইন বাংলাদেশ, থার্ড পারসন সিঙ্গুলার নাম্বারসহ অসংখ্য নির্মাণ তুমুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

Link copied!