যেকারণে নিষিদ্ধ হলো নোবেল লরিয়েট মালালা’র ছবি ‘জয়ল্যান্ড’

বিনোদন ডেস্ক

নভেম্বর ১৫, ২০২২, ০৩:৫৫ পিএম

যেকারণে নিষিদ্ধ হলো নোবেল লরিয়েট মালালা’র ছবি ‘জয়ল্যান্ড’

বিশ্বের সেরা চলচ্চিত্র সম্মান পুরস্কার অস্কারের জন্য মনোনীত পাকিস্তানি সিনেমা ‘জয়ল্যান্ড’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়।  পাকিস্তানি নির্মাতা সাইম সাদিকের পরিচালনায় তৈরি ছবিটি আসছে ১৮ নভেম্বর মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল।

জয়ল্যান্ড-এর অভিনেত্রী সারওয়াত গিলানি। ছবি: এফপি

দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের ৬ অক্টোবর শান্তিতে নোবেল পুরষ্কারজয়ী মালালা ইউসুফজাই প্রযোজিত এই ছবির বিশেষ প্রদর্শনী হয়। কিন্তু মুক্তির দিন কয়েক আগেই পাকিস্তানের ১১টি রাজ্যে নিষিদ্ধ করা হয়েছে ‘জয়ল্যান্ড’ ছবিটিকে। দেশটির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

অস্কারে মনোনয়ন পাওয়ার আগে ছবিটি দেখানো হয় কান চলচ্চিত্র উৎসবে। এই ছবির মাধ্যমেই কান চলচ্চিত্র উৎসবে অভিষেক হয় পাকিস্তানের। এর আগে ২০১৯ সালে সইম সাদিক একটি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি বানান। সেই ছবি ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসব ঘুরে আসে। পূর্ণদৈর্ঘ্যের ছবি এই প্রথম। আর সাইমের প্রথম ছবিই ‘নিষিদ্ধ’ তকমা পেল।

কেন নিষিদ্ধ করা হল?

নির্মাতা সূত্রের বরাত দিয়ে দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের পুরুষতান্ত্রিকতার ওপর জোর আঘাত হানায় দেশটির তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ছবিটির কাহিনী পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রধান চরিত্রে অভিনয়কারী পাকিস্তানের এক কট্টরপন্থী পরিবারের ছেলে।

‘জয়ল্যান্ড’-এর শিল্পী ও কলাকুশলীরা। ছবি: এফপি

‘জয়ল্যান্ড’ ছবিতে রয়েছে একটি সাধারণ পরিবারের কাহিনি, পিতৃতন্ত্রই যেখানে শেষ কথা। সে পরিবারের কর্তা এবং বাকি সদস্যরা পুত্রসন্তানের জন্মের জন্য দীর্ঘ প্রতীক্ষা করে থাকেন। কিন্তু তাঁদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হওয়ার আগেই পরিবারে নেমে আসে অন্য ‘বিপর্যয়’।

লাহোর নিবাসী পরিবারটির কর্তা হুইলচেয়ারে চলাফেরা করেন। নিজের দুই ছেলে এবং পুত্রবধূদের কড়া শাসনে রাখেন তিনি। পুত্রসন্তান চেয়ে ছেলেদের চাপও দেন নিয়মিত। গোটা পরিবারে তিনিই শেষ কথা। তাঁর শাসনে বাকিরা এক প্রকার থরহরিকম্প।

এই পরিবারের ছোট ছেলে হায়দার। তাঁকে নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত। তিনিই এই ছবির নায়ক। তিনি হঠাৎ এক রূপান্তরকামীর প্রেমে পড়েন। হায়দার এবং সেই রূপান্তরকামী বিবার সম্পর্কের সূত্র ধরে ক্রমশ এগোতে থাকে কাহিনি।রূপান্তরকামী বিবা নৃত্যশিল্পী। তাঁর সঙ্গে নেপথ্যশিল্পী হিসাবে নাচতেন হায়দার। সেই সূত্রেই দু’জনের আলাপ। বিবার সঙ্গে থাকতে থাকতে তাঁর প্রেমে পড়ে যান হায়দার।

এই বুনটে বাঁধা ছবির গল্প পাকিস্তান সরকার দর্শকদের দেখাতে আগ্রহী নয়। ছবিটি ব্যান করার কারণস্বরূপ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, ‘জয়ল্যান্ড’ ছবিটি দেশের সংস্কারবিরোধী, তাই দেখানো যাবে না। পাকিস্তানি দর্শকদের একাংশ এই সিদ্ধান্তের নানা সমালোচনা করেছেন, আবার অনেকে সরকারি এই সিদ্ধান্তের প্রশংসাও করেছেন।

জয়ল্যান্ড সিনেমার প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সানা জাফরি। এছাড়াও অন্যদের মধ্যে অভিনয় করেছেন লাহোরের ট্রান্সজেন্ডার অভিনেতা আলিনা খান, আলি জুনেজো, রাস্তি ফারুক, সানিয়া সাঈদ, সোহেল সামির, সালমান পীরজাদা।

Link copied!