শিল্পী সমিতির সদস্যপদ স্থগিত, প্রতিক্রিয়ায় যা জানালেন জায়েদ খান

বিনোদন প্রতিবেদক

এপ্রিল ২, ২০২৩, ১১:৩০ পিএম

শিল্পী সমিতির সদস্যপদ স্থগিত, প্রতিক্রিয়ায় যা জানালেন জায়েদ খান

ঢাকাই চলচ্চিত্রের অভিনেতা জায়েদ খানের বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ প্রাথমিকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। সমিতির উপদেষ্টামণ্ডলী ও আইনজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করে চূড়ান্তভাবেও স্থগিতের ঘোষণা আসতে পারে।   

রবিবার কার্যনির্বাহী কমিটির মিটিং শেষে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সংবাদ সম্মেলনে এ কথাই জানান সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইমন সাদিক। 

সংবাদ সম্মেলনে সাইমন বলেন, “জায়েদ খানের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তা নিয়ম অনুযায়ী তিনটি চিঠি ইস্যু করতে হয়। জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিত করার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে বাতিল করার জন্য উপদেষ্টা কমিটির বিবেচনার জন্য রাখা হয়েছে।”

সাইমন সাদিক আরও বলেন, ‘আমাদের কার্যনির্বাহী কমিটির ৯ম মিটিং হয়েছে। সেখানে একবাক্যে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সমিতির গঠনতন্ত্রের ৭(ক) ধারার আলোকে আমাদের সম্মানিত সদস্য জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিত করা হয়েছে।’

তবে এ ব্যাপারে চিত্রনায়ক জায়েদ খান এক প্রতিক্রিয়ায় দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “সমিতির সদস্যপদ প্রাথমিকভাবে স্থগিত হয় কীভাবে? যেখানে অভিনেত্রী অরুণা বিশ্বাস, সূচরিতা, রুবেল ও ডিপজলসহ উল্লেখযোগ্য সদস্য অনুপস্থিত রয়েছে, সেখানে সর্বসম্মতি সিদ্ধান্ত হয় কিভাবে? এটা একপেশে ও অন্যায়ভাবে করা হয়েছে।”

সদস্যপদ স্থগিতের ব্যাপারে সমিতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে কী করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অবশ্যই আইনের আশ্রয় নিবো। সাধারণ সম্পাদক পদের বিষয়টি এখনও আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। এরমধ্যে সদস্যপদ স্থগিতের মতো সিদ্ধান্ত তারা এককভাবে নিচ্ছে। এটা অন্যায়। সদস্যপদ স্থগিতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিলে অবশ্যই আইনের পথে হাঁটবো।”

কারণ দর্শানো নোটিশের বিষয়ে জানতে চাইলে ঢালিউডের এই অভিনেতা দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে আরও বলেন, “আমি ভারতে থাকাবস্থায় কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। কেন দেওয়া হয়েছে জানেন? দেওয়া হয়েছে যাতে আমি সময়মতো জবাব দিতে না পারি।”

এদিকে, জায়েদ খানের সমিতির সদস্য পদ প্রাথমিকভাবে স্থগিত করায় ক্ষেপেছেন অভিনেত্রী অরুনা বিশ্বাসও। তিনি প্রতিক্রিয়ায় বলেন, জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিত করার পরিকল্পনা করেই তারা কার্যনির্বাহী কমিটির সভা ডেকেছিল। তাদের উদ্দেশ্যই হলো জায়েদ খানের সদস্যপদ স্থগিত করা। কিন্তু আমরা কঠোরভাবে এর প্রতিবাদ করেছি। কেননা আমি যতদূর জানি সাধারণ সম্পাদকের পদটি এখনও বিচারাধীন।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্বে থাকা অভিনেতা পীরজাদা শহীদুল হারুন। অন্যদিকে, জায়েদ খানের বিরুদ্ধে নিপুণ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনেন। পরে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী ওইসব অভিযোগ আমলে নিয়ে নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন আপিল বোর্ডের প্রধান, চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহান।

তবে আপিল বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যান জায়েদ খান। নিপুণ আক্তারও একই পথে হাঁটেন। তবে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে শেষ হাসিটা নিপুণই হাসেন। নিপুণের কাছে সাধারণ সম্পাদক পদ হারানোর পর এবার তাঁরই কারণে সদস্যপদও হারাতে চলেছেন জায়েদ খান। এমনই গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে ঢালিউড পাড়ায়। অবশেষে রবিবার এই গুঞ্জনটা আংশিকভাবে সত্য হয়।

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে কাঞ্চন-নিপুণ ও মিশা-জায়েদ-এই দুই প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ওইসময় মিশা-জায়েদ খানের প্যানেল থেকে নির্বাচিত হওয়া অভিনেতা রুবেল ও অভিনেত্রী সুচরিতার সদস্য পদ সম্প্রতি বাতিল করেছে শিল্পী সমিতি। তারা দুজনই নিপুণের কড়া সমালোচক বলে পরিচিত। তাই কার্যনিবাহী কমিটি থেকে তাদের বাদ দেয়া হয়েছে- এমন ধারণা ঢালিউড পাড়ার অনেকে। তাদের মতে, রুবেল-সূচরিতার পর এবার জায়েদকে মাইনাস করার ব্যবস্থা নিয়েছে কাঞ্চন-নিপুণের নেতৃত্বাধীন কমিটি।

Link copied!