অক্টোবর ৩০, ২০২৩, ০৭:১৫ পিএম
ফুটবলের ঈশ্বর ম্যারাডোনা। শুধু আর্জেন্টিনা সমর্থকদের নয়, ফুটবল ভালবাসেন আর ম্যারাডোনাকে ভালবাসেন না এমন মানুষ নেই বললেই চলে।
সর্বকালের সেরা ফুটবলারদের মধ্যে অন্যতম তিনি।
যত নামেই ডাকা হোক না কেন, তিনি আর্জেন্টাইন ফুটবলার ডিয়েগো ম্যারাডোনা। ১৯৬০ সালের এই দিনে আর্জেন্টিনার বুয়েনস আইরেস প্রদেশের লানুস শহরে জন্মগ্রহণ করেন আর্জেন্টাইন এই জাদুকর। ফুটবল জাদুকর ডিয়েগো ম্যারাডোনার ৬৩তম জন্মদিন আজ।
কারো মতে শ্রেষ্ঠত্বের চূড়ায় জ্বলজ্বলে তারাটি একমাত্র ম্যারাডোনাই। তবে ভালোমন্দ যেভাবেই হোক, ফুটবল বিশ্বকে সবসময় বিমোহিত করেছেন একসময়ের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যারাডোনা।
মাত্র দুই দশকের পেশাদার ক্যারিয়ারে ম্যারাডোনা খেলেছেন ছয়টি ক্লাবে।
১৯৭৭ সালে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের পর ২০ বছরের ক্যারিয়ারে ক্লাব ও জাতীয় দল মিলে আর্জেন্টাইন মহাতারকা মোট গোল করেছেন ৩৪৬টি।
তরুণ বয়সের কারণে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও ১৯৮২ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে চড়ান ম্যারাডোনা। ব্রাজিলের বিপক্ষে লাল কার্ড পেয়ে শেষ হয় তার আসর।
পরের বিশ্বকাপে মেক্সিকোতে বিশ্বকে দেখান তার সামর্থ্য। তার নৈপুণ্য ও নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো আর্জেন্টিনা জিতে নেয় বিশ্বকাপ। তত দিনে বিশ্ব ফুটবলে সবার ওপরে একটিই নাম ডিয়েগো ম্যারাডোনা।
সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই ফুটবলারের অধিনায়কত্বে আর্জেন্টিনা ১৯৮৬`র ফুটবল বিশ্বকাপ জয় লাভ করে।
এরপর ১৯৯০ বিশ্বকাপেও দলকে তুলেছিলেন ফাইনালে। এই আসরে ডোপ টেস্টে পজিটিভ হন এই ফুটবল কিংবদন্তি। ফলে ১৫ মাসের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফিরলেও স্বাভাবিক ছন্দে দেখা যায়নি ম্যারাডোনাকে।
তার ৩৭তম জন্মদিনে ১৯৯৭ সালে তিনি পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর। ২০০৮ সালে ম্যারাডোনা জাতীয় দলের প্রধান কোচ হন। ২০১০ বিশ্বকাপে ব্যর্থ মিশনের পর আর্জেন্টিনার কোচের পদ থেকে অবসর নেন ম্যারাডোনা।
‘হ্যান্ড অব গড’ ম্যারাডোনা খেলোয়াড় হিসেবে সফল হলেও শিক্ষাগুরু হিসেবে হতে পারেন নি।
দক্ষিণ এশিয়ার ছোট্ট একটি দেশ বাংলাদেশ। ফুটবলে যে দেশে কখনোই সে রকমভাবে প্রভাব বিস্তার করতে পারেনি। তবে ফুটবলে কিছু না করতে পারলেও একজন ফুটবলারে মজেছিল পুরো দেশ।
সাদাকালো টিভির পর্দায় একজন ফুটবলার জয় করে নিয়েছিলেন ছোট্ট এই দেশটির কোটি মানুষের মন। তিনি ডিয়েগো আরমান্দো ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টিনাকে ৮৬ বিশ্বকাপটা যিনি একাই জিতিয়ে দিয়েছিলেন। এখন আর্জেন্টিনায় রয়েছে বিশ্বের সেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। কিন্তু তবুও বাঙালির চোখে এখনও ম্যারাডোনাই সেরা।
ফুটবল বিশ্বের অনন্য এই জাদুকরের মৃত্যু ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর। ম্যারাডোনা হয়তো এখন জীবিত নেই। তার মৃত্যুর পরেই আর্জেন্টিনা জিতেছে বিশ্বকাপ।
ম্যারাডোনা তার জীবদ্দশায় সেই অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখতে পারেননি। জন্মদিনে এটিই হয়তো আর্জেন্টিনার ভক্তদের সবচেয়ে বড় আক্ষেপ।