শীঘ্রই ‘মোখা’ রূপ নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ পাঠিয়েছে সরকার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

মে ১০, ২০২৩, ০৩:৫২ পিএম

শীঘ্রই ‘মোখা’ রূপ নিচ্ছে ঘূর্ণিঝড়ে, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ পাঠিয়েছে সরকার

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাতে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গভীর সাগরে মাছ ধরার ট্রলারকে উপকূলে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে ও কক্সবাজারের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানকারীদের জন্য ২০ লাখ টাকা ও শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।

এদিকে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের (আইএমডি) বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নিম্নচাপটি পরিণত হয়েছে গভীর নিম্নচাপে, যা বুধবার (১০ মে) সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় রূপ নিতে পারে। আর পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১১ মে) সকালের মধ্যে এটি পরিণত হতে পারে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে। 

আইএমডির এই বুলেটিনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপটি প্রতি ঘণ্টায় ৫ কিলোমিটার গতিতে (গত ছয় ঘণ্টায়) পশ্চিম-উত্তর-পশ্চিম দিকে সরে গিয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। 

এটি কিছু সময়ের জন্য উত্তর-পশ্চিম দিকে ও তারপর উত্তর-উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার এবং বুধবার সন্ধ্যার দিকে একই অঞ্চলে ধীরে ধীরে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিম্নচাপটি ধীরে ধীরে আরও ঘনীভূত হয়ে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে।

আর বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে নিম্নচাপটি দক্ষিণ-পূর্ব এবং তৎসংলগ্ন মধ্য বঙ্গোপসাগরে অত্যন্ত প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। 

এদিকে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তীব্র গতি নিয়ে ‘মোখা’ নামের সম্ভাব্য ঝড়টি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।

বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিম্নচাপটি মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৪৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ৫৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে বৃহস্পতিবার (১১ মে) পর্যন্ত উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।  

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশেষ ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

সোমবার দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন দক্ষিণ আন্দামান সাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। মঙ্গলবার এটি সুস্পষ্ট লঘুচাপে পরিণত হয়।

ওই বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে এক নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব ধরণের মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। সেইসাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বাতাসের বেগ ঘণ্টায় ৬২ থেকে ৮৮ কিলোমিটার হলে তাকে ‘ঘূর্ণিঝড়’ বলা হয়।  বাতাসের গতিবেগ ৮৯ থেকে ১১৭ কিলোমিটার হলে তাকে বলে ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’। গতিবেগ ১১৮ থেকে ২১৯ কিলোমিটার হলে তাকে ‘হারিকেনের গতিসম্পন্ন ঘূর্ণিঝড়’ এবং তার চেয়ে বেশি গতিবেগ হলে তাকে সু‘পার সাইক্লোন’ বলা হয়।

Link copied!