জননেতা আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক

অক্টোবর ২০, ২০২২, ০৬:২১ পিএম

জননেতা আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আগামীকাল

আগামীকাল ২১ অক্টোবর মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, আওয়ামী লীগের তৎকালীন কেন্দ্রীয় নেতা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষ্যে  বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন  দোয়া ও আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন বৃহত্তর দিনাজপুরের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়াঙ্গনের সুপরিচিত ব্যক্তিত্ব। ভাষা আন্দোলনে একজন সক্রিয় সংগঠক ছিলেন এবং এজন্য তাঁকে কারাবরণ করতে হয়। ঢাকা কলেজে পড়া অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দিনাজপুরে ফিরে ছাত্রলীগকে সংগঠিত করেন। বৃহত্তর দিনাজপুর (দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও-পঞ্চগড়) জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নেতৃত্ব দেন। দিনাজপুর জেলা কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন ছাড়াও কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। ছিলেন দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন। বাংলাদেশ সমবায় ফেডারেশন ও বিআরডিবির প্রতিষ্ঠায় তাঁর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।

১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, বঙ্গবন্ধুর প্রণীত ৬-দফা আন্দোলন পরবর্তীতে ছাত্র সমাজের ১১ দফাসহ আইয়ুব বিরোধী আন্দোলনে আব্দুর রৌফ চৌধুরী ছিলেন প্রথম কাতারে। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন পূর্বাঞ্চলীয় জোনে বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ ও কামরুজ্জামানের দূত হিসেবে তিনি কাজ করেছেন। পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে আন্দোলন এবং পঁচাত্তর পরবর্তী সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে আব্দুর রৌফ চৌধুরীর ভূমিকা অসামান্য। ১৯৯৬ সালে দিনাজপুর-১ (বীরগঞ্জ-কাহারোল) আসন থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০২ সালে জাতীয় শোক দিবসে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখায় বিএনপি-জামায়াতের পুলিশী হামলায় তিনি গুরুতর আহত অবস্থায় গ্রেফতার হয়ে নির্যাতনের শিকার হন। ২০০৭ সালের ২১ অক্টোবর নিজ বাড়িতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

১৯৬২ সালে পঞ্চগড়ের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মরহুম আলহাজ্ব ইসমাইল হোসেন সরকারের বড় মেয়ে রমিজা বেগমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। মৃত্যুকালে স্ত্রী, পাঁচ মেয়ে এবং তার একমাত্র ছেলে রেখে যান।

আব্দুর রৌফ চৌধুরী একমাত্র পুত্র সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর দ্বায়িত্ব পালন করছেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে এক মঞ্চে পিতা-পুত্র ।

 

রৌফ চৌধুরী ১৯৩৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার ধনতলা গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম চৌধুরী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবা মরহুম মৌলভী খোরশেস আলী চৌধুরী ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও মা আয়েশা খাতুন চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী।

তিনি দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের একনাগারে ১৫ বৎসর সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন এবং একই সঙ্গে দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। দিনাজপুরে ৭৫’ পরবর্তী সামরিক শাসন বিরোধী প্রতিটি আন্দোলনে তার অবদান অসামান্য।

১৯৮৮ সালে উপজেলা নির্বাচনে বোচাগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ১৯৯৬ সালে দিনাজপুর- ১ (বীরগঞ্জ- কাহারোল) আসন থেকে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ডাক, তার ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।

Link copied!