মরুর বুকে ‘গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’খ্যাত ফুটবল বিশ্বকাপে মরক্কোর যাত্রা এখন পর্যন্ত অসাধারণ। গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে মরক্কো। এ ছাড়া পরে দুই ম্যাচে আসরের অন্যতম হট ফেভারিট বেলজিয়ামকে ২-০ ও কানাডাকে ২-১ গোল হারায় আফ্রিকান দেশটি। ১৯৮৬ বিশ্বকাপের পর এবার কাতার বিশ্বকাপে চমক দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শেষ ষোলোতে জায়গা করে নিলো দলটি। এবার ইতিহাস গড়ার সুযোগ হাতছানি দিয়ে ডাকছে মরক্কোকে।
মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায় এডুকেশন সিটি স্টেডিয়ামে শেষ আটে পা রাখা বাকি ছয় দলের সাথে যোগ দিতে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়ন স্পেনের সাথে লড়াইয়ে মাঠে নামবে ‘দ্য এটলাস লায়ন্স’। কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিতের লড়াইয়ে কে জিতে তা এবার দেখার পালা।
নকআউটের ম্যাচেও নতুন করে অঘটন ঘটাতে চাইবে মরক্কো। তবে পরিসংখ্যানে এগিয়ে স্পেন। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে স্পেন মরক্কো থেকে ১৫ ধাপ এগিয়ে আছে। স্পেনের র্যাঙ্কিং ৬ আর মরক্কোর ২২।
দুই দলের প্রথম দেখা ১৯৬১ সালে বিশ্বমঞ্চের বাছাইপর্বে। প্রথম ম্যাচে ১-০ গোলে সহজ পায় স্পেন। পরের ম্যাচেই নিজেদের শক্তির জানান দেয় ‘দ্য এটলাস লায়ন্স’। তবে শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলের কষ্টার্জিত জয় পায় লা রোজারা।
এই ম্যাচের প্রায় ৫৭ বছর পর বিশ্বমঞ্চে স্পেন ও মরক্কোর প্রথম দেখা হয় ২০১৮ সালে। তবে রাশিয়া বিশ্বকাপে দ্য এটলাস লায়ন্সদের বিপক্ষে জিততে পারেনি স্পেন। আফ্রিকার দেশটির সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করে লা রোজারা।
তিনবারের দেখায় স্পেন জিতেছে দুবার, একবার হয়েছে ড্র। চার বছর পর আবারও বিশ্বমঞ্চে মুখোমুখি স্পেন-মরক্কো।
কাতার বিশ্বকাপে মরক্কো এবারের 'সারপ্রাইজ প্যাকেজ'। আক্রমণ-রক্ষণ সব দিক মিলিয়ে বেশ ভারসাম্যপূর্ণ একটি দল। গত বিশ্বকাপে রানার্সআপ হওয়া ক্রোয়েশিয়াকে টপকে গ্রুপের সেরাও হয়েছে 'অ্যাটলাস লায়ন্স'।
স্পেনকে যে মরক্কো সহজে ছাড় দিচ্ছে না, সেটি নিশ্চিত করেই বলা যায়। এটি মাথায় রেখেই লড়াইয়ের প্রস্তুতি হিসেবে শিষ্যদের এক হাজার পেনাল্টি প্র্যাকটিস করিয়েছেন স্পেনের কোচ লুইস এনরিখে।
বল পায়ে রেখে পাস করে খেলা স্প্যানিশদের পুরনো কৌশল। এ কৌশলেই তারা ২০১০ বিশ্বকাপ জিতেছিল, তখন দুটি ইউরোও জিতেছিল। তবে জাভি-ইনিয়েস্তাদের ওই সময়টুকু ছাড়া স্পেন তারকাসমৃদ্ধ দল নিয়েও সফলতা পায়নি। অবশ্য জাভি-ইনিয়েস্তার মতো আরও একটি জুটি এবার পেয়েছে স্পেন। গাভি-পেদ্রি টিনএজার জুটি স্বপ্ন দেখাচ্ছে স্পেনকে।
স্প্যানিশ ফুটবলারদের কৌশলের সাথে ভালোভাবেই পরিচিত মরক্কো। মরক্কোর প্রধান তারকা আশরাফ হাকিমি তারকা পিএসজিতে আসার আগে উইংব্যাক রিয়াল মাদ্রিদে খেলেছেন। স্ট্রাইকার ইউসেফ এন-নেসেরি সেভিয়াতে খেলেন, গোলরক্ষক ইয়াসিন বোনোও সেভিয়াতে খেলেন। তাই স্প্যানিশদের বেশ ভালোমতোই চেনেন তারা। এটিই মরক্কোর অস্ত্র হতে পারে।