দীর্ঘ অপেক্ষার পর মর্যাদার ক্রিকেটে সেঞ্চুরি পেয়ে বেশ উৎফুল্ল তিনি। সামনেও ধরে রাখতে চান এ ধারা। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে দলের প্রতিনিধি হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন লিটন। যা বললেন সেখানে-
অনেকদিনের অপেক্ষার পর টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন। কতটা উৎফুল্ল নিজের এই অর্জনে?
লিটন: অনুভূতি তো সব সময় ভালো। কোন ব্যাটসম্যান যদি সেঞ্চুরি করে তার থেকে বড় কিছু থাকে না পাওয়ার। গত দুই তিনটা খেলায় আমি কাছাকাছি গিয়েছিলাম, জিম্বাবুয়ের ম্যাচেও কাছাকাছি গিয়েছিলাম। কিন্তু হয়নি এটা ক্রিকেটের অংশ। এখন সেঞ্চুরি করেছি ভালো লাগছে। কিন্তু এটা যদি আরেকটু বড় করতে পারতাম তাহলে হয়ত দলের জন্য ভালো হত।
বিশ্বকাপের পারফরম্যান্সের পর টি-টোয়েন্টি দল থেকে বাদ পড়লেন। নিজের বাদ পড়ার পর কি কি ভাবনায় এসেছিল? এখন টেস্টে ভালো করে কেমন লাগছে?
লিটন: টি-টোয়েন্টিতে যে জন্য আমাকে ব্রেক দিয়েছিল হয়তো সেটাই হয়েছে মূল ফল। হয়তো তারা (নির্বাচক, টিম ম্যানেজমেন্ট) ভেবেছিল আমি টেস্ট ক্রিকেটে ভালো করি, এজন্য টি-টোয়েন্টিতে ব্রেক দিয়েছিল।
নিজের বর্তমান ফর্ম ও ধারাবাহিকতা ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ কতটুকু?
লিটন: এটা কঠিন প্রশ্ন, ধারাবাহিকতা। সবাই চেষ্টা করেছে ধারাবাহিক হওয়ার জন্য। আমি কতটুকু দিতে পারবো, ফল কতটুকু হবে জানি না। কিন্তু আমি প্রক্রিয়া অনুসরণ করবো। গত ছয়-সাত টেস্ট ধরে করে আসছি। এক’শ করেছি দেখে পরের দিন নামলে যে আবার এক’শ হবে তেমনটা না। টেস্ট ক্রিকেট অনেক কঠিন ক্রিকেট। শূন্য থেকে শুরু করতে হয়। সব সময়ই চ্যালেঞ্জ। আমি চেষ্টা করবো যেভাবে গত ছয়-সাত টেস্টে খেলেছি সেভাবে খেলার জন্য।
মানসিকভাবে নিজেকে কতটা প্রাণবন্ত রেখেছেন?
লিটন: মানসিকভাবে বলতে গেলে... বিশ্বকাপের পর আমি জাতীয় লিগে একটা ম্যাচ খেলেছি। প্রস্তুতি নিয়েছি যে, সামনে টেস্ট ক্রিকেট। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য যেটুক প্রস্তুতি দরকার সেটুকু প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। এর থেকে বাইরে কোন কিছু চিন্তাও করিনি। অতিরিক্ত কোন কিছু চাইও নাই নিজের কাছে।
সেঞ্চুরির পথে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে জুটি বেঁধেছিলেন। কেমন লেগেছে তার সঙ্গে ব্যাটিং করে?
লিটন: ভাইয়ার সঙ্গে জুটি তো আসলে... ছোট ছোট জুটি তো অনেকগুলোই করেছি আমি। এই জুটি অনেক বড় ছিল। নিজের কাছেও অনেক ভালো লাগে যে অপরপাশ থেকে সঙ্গী যখন আপনাকে অনেক সাহায্য করে, অনুপ্রেরণা দেয়। সব মিলিয়ে আমরা দুজনেই কঠিন পরিস্থিতিতে ছিলাম। দুজনেই ওভারকাম করেছি। দুজনই দুজনকে সমর্থন দিয়েছি। এটা সবচেয়ে বড় জিনিস। ভাইয়া যেটার কারণে বারবার আমার কাছে আসছিল। কারণ আমার শরীরে প্রচুর ক্র্যাম্প করছিল।
গতকাল কোচ বলেছিলেন টেকনিকে পরিবর্তন এনেছেন। স্ট্যান্স নিয়ে কাজ করা হয়েছে। আপনি বললেন ব্রেকটা ভালো কাজে দিয়েছে। আসলে ব্যাটিংয়ে কোথায় পরিবর্তন হয়েছে?
লিটন: দুইটা জিনিসই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটিংয়ে জিনিসগুলো আসলে ছোট ছোট। অনেক সময় ছোট্ট একটা বদল আনলে অনেক কিছু হয়ে যায়। গ্রিপ চেঞ্জ করলেই খেলার ধরণ চেঞ্জ হয়ে যায়। যখন আমি বিকেএসপিতে ছিলাম জাতীয় লিগের ম্যাচে তখন ফাহিম স্যার ও মন্টু স্যারের সঙ্গে আলাপ করেছিলাম যে আমার সমস্যা হচ্ছিল। সেখান থেকে আসার পর চট্টগ্রামে আমাদের যে দুটো অনুশীলন সেশন করেছি তখন তার কাছেও মনে হচ্ছিল আমার ছোট্ট একটা জায়গাতে সমস্যা হচ্ছে যে কারণে আমাকে স্ট্যান্সে কিছু একটা চেঞ্জ করে দিয়েছে। আমি বলব না স্ট্যান্স চেঞ্জ হওয়ার কারণে ভালো খেলেছি। আমার কষ্ট ছিল, পরিশ্রম ছিল।