ইউক্রেনের আকাশসীমায় ‘নো ফ্লাইজোন’ ঘোষণা না করায় উত্তর আটলান্টিক সামরিক নিরাপত্তা জোট ন্যাটোর সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তকে ইউরোপীয় জনগণকে রাজপথে নেমে রুশ বিরোধী যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য তাদের সরকারগুলোকে বাধ্য করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। যুদ্ধে ইউক্রেনের পতন হলে তা গোটা ইউরোপের পতন বলেও তিনি মন্তব্য্ করেন।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সামরিক অভিযান ঘোষণার কয়েক মিনিট পরেই ইউক্রেনে বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে রুশ সেনারা।
রুশ বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা বন্ধ করতে ইউক্রেনের আকাশসীমায় ‘নো-ফ্লাই জোন’ ঘোষণার জন্য ন্যাটোর প্রতি আহ্বান জানালেও সাড়া দেয়নি ন্যাটো। ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণা না করায় ন্যাটোর প্রতি তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
গতকা্ল শুক্রবার জেলেনস্কি তার ফেসবুকে জানান, “আমরা বিশ্বাস করি, ন্যাটোর দেশগুলো এমন একটা বিষয় দাঁড় করিয়েছে যে ইউক্রেনের আকাশসীমা বন্ধ করা হলে রাশিয়া ন্যাটোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। যারা দুর্বল ও ভেতরে ভেতরে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে এটা তাদের নিজেদের প্রবোধ দেওয়া ছাড়া কিছু নয়। অথচ তাদের (ন্যাটোর) কাছে কিনা আমাদের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি শক্তিশালী অস্ত্র আছে।”
এর আগে, ইউক্রেনের আকাসসীমায় ‘নো ফ্লাই জোন’ প্রস্তাব নাকচ করে দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। তিনি বলেন, এমনটা করা হলে গোটা ইউরোপজুড়ে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাবে।
মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন কিংবা রাশিয়া কেউই ন্যাটোভুক্ত না হওয়ায় ‘নো ফ্লাই জোন’ নিয়ে ভাবছে না ন্যাটো। এ ছাড়া ‘নো ফ্লাই জোন’ ঘোষণার আরেক অর্থ হলো রুশ যুদ্ধবিমানে ন্যাটোর হামলা। যা করা হলে পরমাণু শক্তিধর রাশিয়ার সঙ্গে ইউরোপের যুদ্ধ বেঁধে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট আবেগময়ী কথাবার্তা বলে ইউরোপীয় জনগণকে উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা করে চলেছেন। তিনি বলেন, “আমরা যদি এ যুদ্ধে জয়লাভ করি তবে তা হবে গণতান্ত্রিক বিশ্বের জন্য একটি সার্বজনীন বিজয়। আর এতে আমাদের পতন হলে ইউরোপের কোনো দেশ বাঁচতে পারবে না।”
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রবেশ করেছে এবং এ পর্যন্ত এক হাজারেরও বেশি লোক নিহত বা আহত হয়েছে।
জাতিসংঘ বলছে, গত বৃহস্পতিবার রাশিয়া আগ্রাসনের নির্দেশ দেওয়ার পর থেকে ১০ লাখেরও বেশি শরণার্থী ইউক্রেন থেকে পালিয়ে গেছে।