ওসি প্রদীপ কুমার দাশ গ্রেপ্তারের পর থেকেই লাপাত্তা তার স্ত্রী চুমকি কারণ। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের করা মামলার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান তিনি। প্রদীপপত্নী দেশেই কোথাও লুকিয়ে আছেন না পালিয়ে বিদেশে গেছেন তা বলতে নারাজ স্বজনরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও চুমকির অবস্থানের সঠিক কোনো তথ্য স্পষ্ট করতে পারছে না।
বিভিন্ন সূত্র মতে, প্রদীপ কুমার গ্রেপ্তারের পর চুমকি কারণ প্রথমে চট্টগ্রাম শহরের সদরঘাটে এক স্বজনের বাসায় কিছুদিন আত্মগোপনে ছিলেন। এরপর থেকে তার আর হদিস মিলছে না। অনেকে ধারণা করছেন তিনি সীমান্ত পাড়ি দিয়ে অবৈধপথে ভারতে পালিয়েছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা জানান, প্রদীপপত্নীকে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা আমাদের কাছে এসেছে। আমরা তাকে খুঁজছি। বিভিন্ন সংস্থার কাছেও এই পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে। দেশে থাকলে তাকে অবশ্যই গ্রেপ্তার হতে হবে।
চুমকি কারণের কোথায় আছেন সে সম্পর্কে জানতে চাইলে তার বাবা অজিত কুমার কারণ বলেন, মেয়ে কোথায় আছে সে ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। এ বিষয়ে তিনি অন্য কোনো কথা বলতেও নারাজ। চুমকি কারণের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বর সম্পর্কেও কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ওসি প্রদীপের সব সম্পত্তিই তার স্ত্রী চুমকি কারণের নামে। চুমকি গৃহিণী। তার বিশ্বাসযোগ্য জ্ঞাত আয়ের উৎস নেই।
২০২০ সালের ২৩ আগস্ট দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় প্রদীপের সঙ্গে তার স্ত্রী চুমকিকেও আসামি করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে ৩ কোটি ৯৫ লাখ ৫ হাজার ৬৩৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, সম্পদের তথ্য গোপন ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ আনেন তদন্ত কর্মকর্তা। তিনি জানান, প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অর্থ স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তর করেছেন।
দুদকের এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।