ডিসেম্বর ৭, ২০২১, ১২:২১ পিএম
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীদের নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মো. মুরাদ হাসান যে কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর বক্তব্য দিয়েছেন তা সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি)নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তার আপত্তিকর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে বলা হয়েছে।
পাশাপাশি আপত্তিকর বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সরানোর নির্দেশনা কার্যকর করা হয়েছে কিনা তা আগামীকালের (বুধবার) মধ্যে আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে।
ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক (সুমন) গণমাধ্যমে এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “মঙ্গলবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে এ বিষয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে এ নির্দেশনা দেন আদালত।”
মঙ্গলবার সকালে মুরাদ হাসানের অশ্লীল অডিও-ভিডিও অপসারণ করতে আদালতের দ্বারস্থ হন ব্যারিস্টার সুমন। আদালতে ব্যারিস্টার সুমন বলেন, “জরুরিভিত্তিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিওগুলো অপসারণ করা প্রয়োজন। অপসারণ না করলে অল্প বয়সের ছেলেমেয়েরা এই ধরনের গালাগালি এবং অশ্লীল কথাবার্তা শুনে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে। তাই প্রতিমন্ত্রীর অশ্লীল অডিও-ভিডিও দ্রুত সরাতে বিটিআরসির প্রতি নির্দেশনা প্রার্থনা করছি।”
প্রসঙ্গত, তারেক রহমানের কন্যা জাইমা রহমানকে নিয়ে অশালীন ও বর্ণবাদী মন্তব্য করায় বাংলাদেশের তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ মুরাদ হাসানের পদত্যাগ দাবি করে বিরোধী দল বিএনপি। অন্যদিকে, নারী বিদ্বেষী মন্তব্যের কারণে তার পদত্যাগ দাবি করে বিবৃতি দিয়েছেন নারী অধিকার কর্মীরাও।
এছাড়া, চিত্রনায়ক ইমন ও অভিনেত্রী মাহির সঙ্গে ফোনালাপে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মাহিকে ‘ধর্ষণের হুমকি’ দেওয়ার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় তুলে আনার হুমকি দেন। তার বক্তব্যজুড়ে ছিল অশ্রাব্য অশালীন শব্দ।
জাইমাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য এবং ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় চরম বিতর্কের মুখে পড়েন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ। নারী অধিকারকর্মীসহ রাজনীতিবিদ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিবৃতি দিয়ে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রীর প্রতি। কোনো কোনো বিবৃতিতে প্রতিমন্ত্রীর পদত্যাগও চাওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত বিষয়টি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবহিত হওয়ার পর তাকে পদত্যাগের নির্দেশ দেন।