একুশে পদক ও বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) বাংলা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, ভাষাবিদ, গবেষক ও প্রাবন্ধিক ড. মাহবুবুল হক আর নেই। দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন তার মৃত্যু হয়।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুপুরে তার লাশ রাজধানীর ভাটারার বাসায় আনা হবে। এরপর নামাজে জানাজা শেষে চট্টগ্রামে নেওয়া হবে। সেখানেই আগামীকাল শুক্রবার তাকে পারিবারিক কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
১৯৪৮ সালের ৩ নভেম্বর ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলায় মাহবুবুল হকের জন্ম। তবে শৈশব থেকে চট্টগ্রামেই তার বেড়ে ওঠা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) থেকে ১৯৬৯ সালে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক (সম্মান) ও ১৯৭০ সালে একই বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও ১৯৯৭ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
এরপর শিক্ষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষকতা করেছেন চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে। কর্মজীবনের একপর্যায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি।
শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রায়োগিক বাংলা ও ফোকলোর চর্চা, গবেষণা, সম্পাদনা, অনুবাদ ও পাঠ্যবই রচনা করে পরিচিতি লাভ করেছেন ড. মাহবুবুল হক। বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলা একাডেমি, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডসহ বিশেষজ্ঞ হিসেবে নানা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করেছেন।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বেশ কয়েকটি বাংলা পাঠ্য বইয়েরও রচয়িতাও তিনি। আহ্বায়ক হিসেবে নতুন শিক্ষা নীতি অনুযায়ী ২০১২ ও ২০১৩ শিক্ষাবর্ষের বাংলা শিক্ষাক্রম ও বাংলা পাঠ্যবই প্রণয়নে দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম প্রণয়নেও সক্রিয় ছিলেন।
প্রবন্ধ সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার পান তিনি। গবেষণায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদক প্রদান করেছে।