জুলাই ১৪, ২০২৩, ০২:৪০ পিএম
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ মৃত্যুবরণ করেছেন। দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর শুক্রবার (১৪ জুলাই) ভোরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
বুলবুল মহলানবীশ একাধারে কবি ও লেখক সংগীত, নাট্য ও আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও খ্যাতি লাভ করেছিলেন। পাশাপাশি তিনি টেলিভিশন-বেতার-মঞ্চে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান তিনি উপস্থাপনা করতেন।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিকালে সেই সময়কার রেসকোর্স ময়দানে যখন পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করছিল ঠিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণে কলকাতার বালিগঞ্জের স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘বিজয় নিশান উড়ছে ঐ-গানটি। বাঙালির বিজয়ের ঐতিহাসিক ক্ষণে কালজয়ী গানটিতে কণ্ঠ দেওয়া শিল্পীদের অন্যতম বীর মুক্তিযোদ্ধা বুলবুল মহলানবীশ।
নজরুল সংগীতশিল্পী বুলবুল মহলানবীশ নজরুল সংগীতশিল্পী পরিষদের সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র একাডেমি। জাতীয় কবিতা পরিষদ, কচিকাঁচার মেলা, উদীচী, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র শিল্পী পরিষদসহ বহু সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। তবে সব ছাপিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-কণ্ঠযোদ্ধা পরিচয়টি তিনি বহন করতেন বিনম্র গৌরবে।
বুলবুল মহলানবীশের দুটি গানের অ্যালবাম রয়েছে। প্রকাশিত হয়েছে ১২টির বেশি গ্রন্থ। মুক্তিযুদ্ধের পূর্ব প্রস্তুতি ও স্মৃতি ৭১ তার বহুল আলোচিত বই। সাহিত্য-সংস্কৃতিতে অবদানের জন্য পেয়েছেন চয়ন স্বর্ণপদক, দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ ফাউন্ডেশন সম্মাননা, পশ্চিমবঙ্গের নজরুল একাডেমি সম্মাননা পদক।
অন্যদিকে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অনুষ্ঠান ব্যবস্থাপক ও উপস্থাপক আশফাকুর রহমান খান। গত জানুয়ারি মাস থেকে বার্ধক্যজনিত অসুখে ভুগছিলেন তিনি।
তাঁর মরদেহ রাজধানীর মনিপুরীপাড়ার বাসায় রাখা হয়েছে। রাজধানীর ফার্মগেট এলাকার বায়তুশ শরফ মসজিদে জুমার পর প্রয়াত আশফাকুর রহমান খানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মরদেহ দাফনের জন্য মুন্সীগঞ্জের ষোলশহরের নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে তাঁকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা- গার্ড অব অনার প্রদানের পরে দাফন করা হবে।
আশফাকুর রহমান খান দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে বাংলাদেশ বেতারে যোগদান করেন। বেতারের থেকে উপ-পরিচালক পদে উন্নীত হয়ে অবসরে যান।