দেশের অন্যতম স্টিল মিলস কোম্পানি রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর গুলশানের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বুধবার রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, আরএসআরএমের এমডি মাকসুদুর রহমান দেশের অন্যতম শীর্ষ ঋণখেলাপি। অর্থ আত্মসাতের দায়ে তাঁর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আদালতের দুটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে। এর মধ্যে একটি গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জনতা ব্যাংকের ৩১৩ কোটি টাকা ঋণখেলাপের অভিযোগে গত ২৭ জানুয়ারি মাকসুদুর রহমানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেয় আদালত।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ ৩১২ কোটি ৮২ লাখ ৩২ হাজার ৯৯৭ টাকা খেলাপি ঋণ আদায়ের দাবিতে আদালতে মামলা করে (মামলা নং ৫৩/১৮) জনতা ব্যাংকের লালদীঘি করপোরেট শাখা। এতে আসামি করা হয় মাকসুদুর রহমানকে। আরএসআরএমের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স রতনপুর শিপ রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের নামে ওই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। বিপুল পরিমাণ ঋণ অনাদায়ি থাকা সত্ত্বেও মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তির ব্যাপারে ব্যাংক যত্নশীল ছিল না। মামলা দায়ের করার সাড়ে তিন বছর পর ঘটনাটি আদালতের নজরে এলে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারের মাধ্যমে সমন জারি নিশ্চিত করা হয়।
বিচারিক প্রক্রিয়া ফলপ্রসূ করার স্বার্থে অর্থঋণ আদালত আইন ২০০৩-এর ৫৭ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে বাদীর দরখাস্ত মঞ্জুরক্রমে ২ নম্বর বিবাদী মাকসুদুর রহমানকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে গত ১ ফেব্রুয়ারি তাঁর পাসপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। তিনি যাতে দেশত্যাগ করতে না পারেন, তা নিশ্চিত করতে আদেশের কপি বাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপির (বিশেষ শাখা) কাছে পাঠানো হয়েছিল।
১৯৭৩ সাল থেকে ইস্পাত ট্রেডিং ব্যবসা শুরু করেন মাকসুদুর রহমান। ব্যবসার পরিধি ধাপে ধাপে বাড়তে থাকলে ১৯৮৬ সালে এই উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠা করেন রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেড। এই কোম্পানিই সংক্ষেপে আরএসআরএম নামে বেশি পরিচিত। ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারেও তালিকাভুক্ত হয় ‘এ’ ক্যাটাগরির আরএসআরএম।