ডিসেম্বর ১৭, ২০২১, ০৩:৪০ পিএম
কোভিড সংক্রমণ শুরু হওয়ার প্রায় দেড় বছর পর মানুষ আবারও ফিরতে শুরু করেছে স্বাভাবিক জীবনে। আর স্বাভাবিক জীবনের কর্মব্যস্ততায় অনেকটাই হাঁপিয়ে গেছে নাগরিক মন। তাই হাঁপ ছেড়ে বাঁচার জন্য মানুষ ছুটছে দেশের বিভিন্ন ভ্রমণতীর্থগুলোতে। কেউ একা, কেউবা পরিবারসহ আবার কেউ বন্ধুবান্ধবদের নিয়ে। তাই স্বাভাবিকভাবেই লোকারণ্য হয়ে ওঠছে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সুন্দরবন, শ্রীমঙ্গল এবং অন্যান্য সব পর্যটন কেন্দ্র এখন মুখরিত পর্যটকে।
কোভিডের ভয়াবহ থাবা যখন বেশ খানিকটা নিয়ন্ত্রণে তখন বছরের শেষদিকে বিজয় দিবসসহ সবমিলিয়ে ৩ দিনের ছুটি পাওয়ায় সবাই পরিবার-পরিজন, বন্ধু-স্বজন নিয়ে দীর্ঘদিনের অবসাদ, ক্লান্তি ধুয়ে ফেলত ছুটছেন সাগরের দিকে।
৩ দিনের ছুটির প্রথম দিনেই প্রায় ৩ লাখ পর্যটকের পদভারে মুখরিত হয়েছে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। একই অবস্থা দেশের আরেক সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটারও। পর্যটকের এই ঢলকে পুঁজি করে হোটেল-মোটেল এবং কটেজের ভাড়া বাড়ানো কয়েকগুণ। ছুটির প্রথম দিনই কক্সবাজারের ছোটেন তিন লক্ষাধিক পর্যটক!
কক্সবাজারে সাগরপারের প্রায় ৫০০ হোটেল-মোটেল ও কটেজে কোনো কক্ষই তাই খালি নেই। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ভ্রমণ পিয়াসীদের। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালেই কক্সবাজারে পা রাখেন জামালপুর থেকে যাওয়া ৫ জনের একদল যুবকের দল। থাকার জন্য একটি আবাস স্থির করতেই ৩/৪ ঘন্টা লেগে গিয়েছে তাদের। দলের সদস্য মাহাবুব দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, “সকালে এখানে আসার পর থেকেই প্রচণ্ড ভিড়। কোন হোটেল-মোটেলই খালি পাচ্ছিলাম না। প্রায় ৩/৪ ঘন্টা এ হোটেল থেকে ও হোটেল দৌঁড় কেটে ২ হাজার টাকার রুম পেয়েছি ৮ হাজার টাকা দিয়ে।”
মাহাবুব আরও বলেন, “কেবল থাকার জন্যই নয়, খাবার জন্যই গুণতে হচ্ছে অতিরিক্ত পয়সা। কেবল এক প্লেট ডাল-ভাত খাওয়ার জন্য দিতে হচ্ছে প্রায় ২০০ টাকা।’’
চট্টগ্রাম থেকে পরিবারের সঙ্গে কক্সবাজার ঘুরতে গিয়েছেন নাফিস সাইফ। তিনি দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, “ট্যুরিস্ট সিজনে একটু ভাড়া বেশি থাকে এটা সবাই জানি। কিন্তু এবার আগের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “হঠাৎ এত বেশি ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় আমাদের অনেক পরিকল্পনা বাদ দিতে হয়েছে। তিনদিনের ট্যুর এখন দুদিনে নামিয়ে আনতে হয়েছে।”
কুয়াকাটায় ঘুরতে যাওয়া একাধিক পর্যটকও এই ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সেখানে ঘুরতে যাওয়া এক পর্যটক দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে জানান, “এখানে ২ হাজার টাকা যেসব কামরার ভাড়া সেগুলোর ভাড়া রাখা হচ্ছে ৭/৮ হাজার টাকা।”
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, “পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশ নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে সাদা পোশাকেও ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন। তাদের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরাও নজরদারি করছেন।”