ডিসেম্বর ১৩, ২০২১, ০৮:৩৩ পিএম
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দ্রুত মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আবিগেল বয়েড নামে অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের এক সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) পাঠানো এই চিঠিতে বয়েড লিখেছেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয় চিকিৎসার বিষয়ে মানবিক পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশের দীর্ঘ সময়ের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনার প্রতি অস্ট্রেলিয়ার পার্লামেন্টের সদস্য হিসেবে আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।”
খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবনতিশীল পরিস্থিতি সবাই জ্ঞাত উল্লেখ করে বয়েড লেখেন, “খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদন মঞ্জুর এবং তাকে বিদেশে জরুরি চিকিৎসাসেবা নেওয়ার অনুমতি দিতে আপনার (শেখ হাসিনা) প্রতি আমরা আবেদন জানাচ্ছি।”
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, “যদি বন্দি অবস্থায় তিনি (খালেদা জিয়া) মারা যান, তাহলে সেটা ব্যক্তিগতভাবে খালেদা জিয়ার জন্য এবং তার পরিবারের জন্য ট্র্যাজেডি হয়ে থাকবে। অনুগ্রহ করে খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করুন।”
প্রসঙ্গত, এর আগে ড. আইভান স্টেফানেক নামে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এক সদস্য খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লেখেন।
চিঠিতে আইভান স্টেফানেক লেখেন, ‘খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছে বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর বের হয়েছে। তার শর্তাধীন মুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি ও জরুরি ভিত্তিতে চিকিত্সার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার অবনতির বিষয়টির ওপর আলোকপাত করে আপনি (শেখ হাসিনা) ও আপনার সরকারের কাছে আবেদন করব, জরুরি চিকিত্সার জন্য তাকে বিদেশে পাঠাতে তার পরিবারের আবেদনে যেন অনুমোদন দেওয়া হয়।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের গত ১২ অক্টোবর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করার জন্য রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে। পরে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিন সপ্তাহেরও বেশি সময় পর গত ৭ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। কিন্তু সপ্তাহ না ঘুরতেই শনিবার (১৩ নভেম্বর) তাকে আবার হাসপাতালে ভর্তি করার পর এখন সিসিইউতে রাখা হয়েছে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আথ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁত, চোখের প্রদাহ, হৃদরোগসহ বয়সজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
গত ২৫ অক্টোবর ২৫ অক্টোবর শরীরের টিউমার ধরা পড়ায় খালেদা জিয়ার বায়োপসি করা হয়।ওইসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার বায়োপসি রিপোর্টে ক্যান্সারের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ডিত হলে খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে পাঠানো হয়। করোনার কারণে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার শর্ত সাপেক্ষে তাকে সাময়িক মুক্তি দেয়। এখন পর্যন্ত চারবার খালেদা জিয়ার মুক্তির সময় বাড়ানো হয়েছে।