তিনটি গরু চুরি গেছে কৃষক নুরুল ইসলামের। থানায় দিয়েছেন অভিযোগ। গরু উদ্ধারের খবরে থানায় গিয়ে দেখেন, গরু চোর আর কেউ নয়, তারই ছেলে মাসুম মিয়া! ঘটনাটি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের হাটুলিয়া গ্রামের।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, চাহিদামতো টাকা না পেয়ে বেশ কয়েক দিন ধরে বাবার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন ছেলে মাসুম মিয়া। অবশেষে সুযোগ বুঝে রাতে নিজেদের গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু ‘চুরি’ করে পিকআপে তুলে নিয়ে যাওয়ার পথে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তিনি। সোমবার রাতের ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেন বাবা নুরুল ইসলাম।
স্থানীয়রা জানান, গ্রামের নুরুল ইসলামের ছয় ছেলে। সকলেই কোনো না কোনো কাজ করেন। চতুর্থ ছেলে মো. মাসুম মিয়ার (২৫) স্থানীয় বাজারে একটি মনোহারি দোকান আর ফ্লেক্সিলোডের ব্যবসা রয়েছে।
নুরুল ইসলাম জানান, প্রায় দুই মাস আগে তার স্ত্রী রাগ করে চলে যান। এর পর থেকে মাসুম মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এদিক-সেদিক চলাফেরা শুরু করে। ব্যবসার আয়ের বিশাল একটা অংশ বিভিন্নভাবে খরচ করে ফেলে। এ অবস্থায় বেশ কয়েক দিন ধরে অর্থ সংকটে পড়ে যায় সে। এক পর্যায়ে ভাইয়েদের কাছে টাকা চেয়ে না পেয়ে জমি বিক্রি করে তিন লাখ টাকা দেওয়ার জন্য চাপ দেয় মাসুম। তার চাহিদামতো টাকা না দেওয়ায় কয়েক দিন ধরে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দিয়ে আসছিল। অনেক বুঝিয়ে তাকে তার ব্যবসায় বসালেও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছাড়াও টাকা চাওয়া অব্যাহত ছিল।
সোমবার তারাবির নামাজের পর বাবাকে দোকানে ডেকে নেন মাসুম। নিজে খাওয়ার কথা বলে দোকান ছেড়ে বের হন। রাত ১২টার পরও দোকানে না যাওয়ায় বাবা নুরুল দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যান। গিয়ে দেখেন বাড়ির সামনে গোয়ালঘরের দরজা খোলা। খোঁজ নিয়ে দেখেন সাতটি গরুর মধ্যে তিনটি গরু নেই। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় বিষয়টি অবহিত করেন। সেখান থেকে আশপাশ এলাকায় থাকা টহল পুলিশকে ঘটনাটি জানালে নান্দাইল থানার কানুরামপুর বাসস্ট্যান্ডে পিকআপের ভেতর গরুসহ ধরা পড়েন মাসুম। গরুসহ তাকে নান্দাইল থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
পরে নুরুল ইসলামকে খবর দেওয়া হলে তিনি থানায় যান। সেখানে গিয়ে দেখেন ‘চোর’তার ছেলে। এ সময় তিনি গরু এবং ছেলেকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন।
নান্দাইল থানার উপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদের জানান, বাবার কোনো ধরনের অভিযোগ না থাকায় গরুসহ অভিযুক্ত ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।