গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আলোচিত নির্বাচনে মেয়র পদে জয় পেলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। তিনি সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগ থেকে বহিস্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা। স্বতন্ত্র এ প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীক নিয়ে লড়াই করে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের আজমত উল্লা খান। আজমত নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের ব্যবধানে জয় পেয়েছেন জায়েদা খাতুন।
গাজীপুর সিটির ভোটের আগে জায়েদা খাতুন ৯ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। সেখানে তিনি নগরবাসীর জন্য আগামী ৫ বছরের হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। ভোটের আগে প্রার্থীরা নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন। জায়েদাও দিয়েছিলেন। তাঁর অন্যতম প্রতিশ্রুতি ছিল এই হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ।
নগর বিশ্লেষকদের মতে, এটা নতুন মেয়র জায়েদার জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ হবে। কারণ গাজীপুরের মতো এতো বড় একটি সিটির ব্যয় বহন করা এবং উন্নয়নের জন্য বাজেট দরকার। কেন্দ্রীয় সরকার থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা না পেলে জায়েদার পক্ষে সিটির উন্নয়ন করা সম্ভব হবে না। তবে সরকারের সহযোগিতা পেলে জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হতে পারেন জায়েদা।
নব নির্বাচিত মেয়র জায়েদার জন্য আরও একটি চ্যালেঞ্জ হচ্ছে তাঁর বয়স। তবে তাঁর সমর্থকরা মনে করছেন, ছেলে জাহাঙ্গীর রাজনৈতিক জটিলতায় না পড়লে ছায়া হয়ে থাকবেন মায়ের পাশে। সেক্ষেত্রে জাহাঙ্গীরের উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে না। সে ক্ষেত্রে বয়স বাধা হবে না জায়েদার সামনে।
ভোটের আগে জায়েদা ঘোষণা দিয়েছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের পরিকল্পনা ও তাঁর প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী তাঁর সব অসমাপ্ত কাজ সম্পাদন করবেন। তবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতেও সরকারের সহায়তা লাগবে।
ভোটের ফলাফলের পর অবশ্য জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, মা হবেন প্রশাসনিক প্রধান। আমার অভিজ্ঞতার জ্ঞান দিয়ে তাঁর পাশে থেকে সহযোগিতা করা হবে আমার কাজ।
একদিকে ছেলে দল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার আর অন্যদিকে দলহীন জায়েদা খাতুন কি পারবেন সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করে সফল হতে? নগরবাসীকে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে অপেক্ষা করতে হবে সামনের দিনগুলোর জন্য।