চট্টগ্রাম ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ ও সরকার দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হেফাজত কর্মীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে জনপ্রতি ১০০ উটের সমপরিমাণ মূল্য দাবি করেছে হেফাজতে ইসলামের নেতারা। পৃথক সংঘর্ষে নিহত ২০ নেতাকর্মীর 'রক্তের বদলা' হিসেবে ২০০০ উটের দাম প্রায় ৪০ কোটি টাকা সরকারকে দিতে হবে বলে জানায় তারা। শুক্রবার (২ এপ্রিল) চট্টগ্রামের হাটহাজারী ডাক বাংলো চত্বরে এক প্রতিবাদ সমাবেশে হেফাজত নেতারা এ দাবি করেন। দেশব্যাপী সংঘর্ষে কর্মী নিহতের ঘটনায় হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলা শাখা এ সমাবেশের আয়োজন করে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংঘর্ষে কর্মী নিহতের ঘটনায় প্রায় ৪০ কোটি টাকার 'ক্ষতি'র হিসাব দেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীর ব্যাক্তিগত সহকারী ও হেফাজতে ইসলাম হাটহাজারী উপজেলা শাখার সহ-প্রচার সম্পাদক ইনামুল হক ফারুকী।
তিনি বলেন, "বিনা কারণে পুলিশ গুলি চালিয়ে হেফাজত নেতাকর্মীদের হত্যা করেছে। এ জন্য সরকারকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। একজন ব্যাক্তিকে বিনা কারণে হত্যার ইসলাম সম্মত ক্ষতিপূরণ হলো ১০০ উট বা সমপরিমাণ অর্থ। বর্তমানে বাংলাদেশ একটি উটের দাম ২ লাখ টাকা। সে হিসেবে ১০০ টি উটের দাম প্রায় ২ কোটি টাকা। ২০ জন শহিদের ক্ষতিপূরণের মূল্য প্রায় ৪০ কোটি টাকা। এ ক্ষতিপূরণ অবশ্যই সরকারকে দিতে হবে।"
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, "গত শুক্র, শনি ও রোববার সারা দেশে যেসব হেফাজতের নেতা-কর্মীরা শহিদ হয়েছেন, তাদের ক্ষতিপূরণ সরকারকে দিতে হবে। ছাত্রলীগ, পুলিশের হামলায় হেফাজতের যেসব নেতাকর্মী আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। সারাদেশে হেফাজত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যেসব মিথ্যা মামলা দায়ের হয়েছে সেগুলো প্রত্যাহার করে নিতে হবে।"
এদিকে হেফাজতের এই বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক বন্ধ করে দেয় পুলিশ। এ কারণে সড়কটিতে প্রায় দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ ছিলো। ফলে আবারও দুর্ভোগ পোহান এই সড়কে যাতায়াতকারী হাজার হাজার যাত্রী।
গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ আগমনকে কেন্দ্র করে হাটহাজারীতে হেফাজত ও পুলিশের সংঘর্ষে গুলিতে চারজন নিহত হন। সেদিন থেকে ছাত্ররা হাটহাজারী মাদ্রাসা গেটে অবস্থান নিয়ে দেয়াল তুলে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক অবরোধ করে রাখে। তিনদিন পর প্রশাসনের অনুরোধে তারা সেই দেয়াল তুলে নিলে স্বাভাবিক হয় চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক।