নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জে শ্যালিকাকে অপহরণের পর হত্যা মামলার পলাতক প্রধান আসামি শহিদ শাহসহ(৪০) তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। গাজীপুরের কালীয়াকৈর থেকে র্যাব-১৩ এর ক্রাইম প্রিভেনশন কোম্পানি-২ তাদের গ্রেপ্তার করে।
অন্য দুই আসামি হলেন- হেলাল মিয়া (৫৮) ও আব্দুল করিম শাহকে (৪৭)।
রবিবার দুপুরে র্যাব-১৩ এর সহকারি পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়. অপহরণের ৩ মাস পর নীলফামারীর কিশোরঞ্জের নিতাই ইউনিয়নের পানিয়ালপুকুর গ্রাম থেকে গোপনে দাফনের সময় এক তরুণীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় পালিয়ে যায় ওই তরুণীর দুলাভাই শহীদ শাহ ও তার পরিবারের লোকজন।
নিহত ওই তরুণী কিশোরগঞ্জ ইউনিয়নের মুসা গ্রামের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের মেয়ে। মেয়েটির দুলাভাই শহিদ শাহ উপজেলার পানিয়ালপুকুর গ্রামের জাকারিয়া শাহর ছেলে জয়পুরহাট জেলায় কর্মরত একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের দুই মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে স্মৃতির সঙ্গে শহিদ শাহর বিয়ে হয়। তারা জয়পুরহাট জেলা শহরে থাকত। তাদের একটি ৭ বছরের সৌধ্য নামের একটি ছেলেসন্তান রয়েছে। পারিবারিক কলহে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে স্মৃতি সন্তানসহ বাবার বাড়ি ফিরে আসে।
এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৯ জানুয়ারি শহিদ শাহ তার একমাত্র শ্যালিকাকে অপহরণ করেন। এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষে থানায় মামলা করা হয়। পুলিশ ওই সময় অভিযান চালিয়ে অপহৃতকে উদ্ধার ও অপহরণকারী আসামি দুলাভাইকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।
৬ মাস পর শহিদ শাহ জামিন পান। মামলাটি আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর শহিদ শাহ পুনরায় শ্যালিকাকে অপহরণ করে গা-ঢাকা দেন। এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা কিশোরগঞ্জ থানায় মামলা করেন। কিন্তু পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অপহৃতকে উদ্ধার করতে পারেনি।
আসামি শহিদ শাহ ওই তরুণীকে নিয়ে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করেন এবং একপর্যায়ে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। তরুণীকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন শহিদ। ১৪ জানুয়ারি নির্যাতনের একপর্যায়ে শহীদ শাহ অন্তঃসত্ত্বা তরুণীর পেটে লাথি মারে এবং পরবর্তীতে সে রক্তক্ষরণে মারা যায়। এ ঘটনায় তরুণীর বাবা বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করে।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, জিজ্ঞাসাবাদে শহিদ শাহ ওই দিনের ঘটনা সম্পূর্ণ বর্ণনা করে। ১৪ জানুয়ারি তরুণীকে নির্যাতনের একপর্যায়ে শহিদ মেয়েটির পেটে লাথি মারে। এতে রক্তক্ষরণ শুরু হলে তিনি তরুণীকে রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি করার জন্য নিয়ে যায়। কিন্তু তরুণী তখন রক্তক্ষরণে মারা যায়। পরে শহিদ মেয়েটির মরদেহ নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে গোপনে দাফনের চেষ্টা করেন।