জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ করেছেন পরীমণি। এদিকে পরীমণির বিরুদ্ধে নাসিরের অভিযোগ, সেদিন সম্পূর্ণ মাতাল অবস্থায় ছিলেন পরীমণি ও তার সঙ্গীরা। গ্রেফতার হবার পর পুলিশ জিপে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে এমনটি জানান নাসির।
তিনি বলেন, 'আমি ১০ জুন রাতে যখন ক্লাব থেকে বের হই তখন তারা (পরীমনি ও তার বন্ধু) ক্লাবে ঢোকে। তারা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের মধ্যে একটি ছেলে উশৃঙ্খল ছিল। ক্লাবে ঢোকার পর আমাদের বারের কাউন্টার থেকে বড় বড় ও দামি ড্রিংকসের বোতল জোর করে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘তখন আমি তাদের কাছে গিয়ে বলি, আপনারা ড্রিংকসগুলা নিতে পারেন না। আমি তাদের বাধা দেই। আমি বলি, এটা শুধুমাত্র ক্লাবের মেম্বারদের জন্য। এখান থেকে মদ নিতে হলে তোমাদের কোনো সদস্যের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে নিতে হবে। তারপর আমি আমার সিকিউরিটিদের ডাক দেই। নিরাপত্তারক্ষীরা এসে তাদের নিয়ে যায়।’
সোমবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর উত্তরার ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের বাসায় অভিযান চালিয়ে নাসির সহ মোট ৫ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টার দায়ে এবং অবৈধ বিদেশী মদ এবং মাদকদ্রব্য রাখার দায়ে গ্রেফতার করা হয় তাদের।
এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় ফেসবুকে এক স্ট্যাটাস দেন পরীমণি। সেখানে তিনি জানান, তাকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। পরবর্তীতে রাতে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযুক্তের নাম বলেন পরীমণি। সোমবার (১৪ জুন) সকালে এ বিষয়ে সাভার থানায় একটি মামলাও দায়ের করেন পরীমণি। দুপুরের মধ্যে মামলার প্রধান আসামী নাসিরসহ আরো ৪ জনকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পুলিশ বলছে, এই বাসায় প্রতিদিন ডিজে পার্টির আয়োজন করতেন নাসির। উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করানো হতো। বাড়িটিতে যাতায়াত ছিল অনেকের। গোয়েন্দা বিভাগ (উত্তর-তেজগাঁও, গুলশান, মিরপুর ও উত্তরা) এবং সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর-রশীদ বলেন, জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
অভিযানকালে নাসিরের বাসা থেকে বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। তার বাসায় উঠতি বয়সী নারীরা এসে মদপান করতেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তার বাসায় ডিজে পার্টির আয়োজন ছিল বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।