করোনা মোকাবিলায় চলমান কঠোর লকডাউনের মধ্যে বিধিনিষেধ মেনে তৈরি পোশাকখাতসহ দেশের সব রপ্তানিমুখী শিল্প কারখানা খুলে দেওয়ার ঘোষণায় ঈদ উল আজহায় বাড়ি যাওয়া শ্রমিক ও কর্মজীবী মানুষেরা এখন রাজধানী ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন।
রবিবার (১আগস্ট) থেকে রফতানিমুখী শিল্পকারখানা চলমান বিধিনিষেধের বাইরে থকার ঘোষণা দিয়ে শুক্রবার (৩০ আগস্ট) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আগামী ১ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে রফতানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা আরোপিত বিধিনিষেধের আওতা বহির্ভূত রাখা হলো।’
বেশিরভাগ গার্মেন্টস রাজধানী ও এর আশপাশে হওয়ায় গার্মেন্টস খোলার ঘোষণায় পোশাক শ্রমিকররা এখন রাজধানীতে পৌঁছতে মরিয়া হয়ে উঠছে। দক্ষিণ বঙ্গের জেলাগুলো থেকে ঢাকামুখী পোশাক শ্রমিকদের প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়েছে মাদারীপুর জেলার বাংলাবাজার ও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে। দলে দলে লোকজন ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন ফেরিঘাটে।
ফেরিঘাটে আসার পথে স্থানে স্থানে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) চেকপোস্ট, পুলিশী টহল কোনো কিছুই এই জনস্রোতক থামাতে পারেনি।
গণপরিবহন ও দূরপাল্লার বাস এবং মালবাহী ছাড়া যেকোনো পরিবহন বন্ধ থাকার কথা থাকলেও মোটরসাইকেল রাইড শেয়ার, সিএনজিচালিত অটো রিক্সা, মাইক্রোবাস, ট্রাক, ভ্যান যে যেভাবে পারে বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে আসছেন। গাদাগাদি করে ঢাকার দিকে ছুটছেন কর্মজীবী মানুষ। কোথাও মানা হচ্ছে না নূন্যতম স্বাস্থ্যবিধি। পরে ফেরিতে নদী পার হয়ে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় পৌঁছে রাজধানীর দিকে ছুটছেন।
যানবাহন বন্ধ থাকায় এবং যারা কোনো যানবাহন ম্যানেজ করতে পারেননি তারা দীর্ঘ কিলোমিটার পথ শুধুমাত্র হেঁটে হেঁটেই ঘাটে উপস্থিত হচ্ছেন অনেক যাত্রী।
স্থানীয় ও নৌপুলিশ সূত্র জানায়, বাংলাবাজার ঘাটের প্রবেশমুখের বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্টের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার ঘাটে শৃঙ্খলা রক্ষায় বাড়ানো হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ।
মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল কবির দ্য রিপোর্টকে বলেন,‘রবিবার (১ আগস্ট) থেকে গার্মেন্টস খোলার খবরে রাজধানী ঢাকার উদ্দেশ্যে হাজারো মানুষ ঘাটে এসে ফেরির জন্য অপেক্ষা করছেন। আমরা চেষ্টা করছি জনগণের ভোগান্তি যাতে কম হয়। এজন্য যাত্রীদের লাইন দিয়ে ফেরিতে ওঠানো হচ্ছে। পাশাপাশি তারা মাস্ক পরছেন কিনা তা তদারকি করছি।’
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া শাখা সূত্রে জানা যায়,যাত্রী আর যানবাহন পারাপারে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে বর্তমানে ১৭টি ফেরি সচল রয়েছে।
স্থানীয় ও পাটুরিয়া ঘাট সূত্রে জানা যায়,পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে ১৬টি চালু রয়েছে। এসব ফেরিতে অতিরিক্ত যাত্রীর কারণে পণ্যবাহী যানবাহনের সংখ্যা কমে গেছে। একটি ফেরি ঘাটে ভিড়লেই কে আগে উঠবে তার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যায় যাত্রীদের মাঝে।