অক্টোবর ১৫, ২০২২, ১২:২৯ এএম
চট্টগ্রামের জনসভায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরীর স্লোগানকে কেন্দ্র করে জোর আলোচনা-সমালোচনা চলছে। বুধবার চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠে বিএনপি আয়োজিত বিভাগীয় সমাবেশে হুম্মাম একটি বক্তব্য দেন। এক পর্যায়ে তিনি বক্তৃতায় ‘নারায়ে তকবির’ স্লোগান দেন। যদিও এমন স্লোগানকে ব্যক্তিগত বলে জানিয়েছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
ওই স্লোগানের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন. এরকম একটি স্লোগানের মাধ্যমে বিএনপি ও জামায়াতের যে আদর্শগত পার্থক্য নেই, সেটিই পরিষ্কার করেছে দলটির ওই নেতা।
হুম্মামের স্লোগান নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীরাও তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। পক্ষে-বিপক্ষে চলছে বাদানুবাদ। খোদ বিএনপিতেই চলছে পক্ষে-বিপক্ষে মন্তব্য।
হুম্মাম যখন বক্তৃতা করেন সে সময় মির্জা ফখরুলসহ কেন্দ্রীয় নেতারাও মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। বক্তব্যে হুম্মাম বলেন, 'বেশি সময় নেব না। অনেক সিনিয়র নেতা এসেছেন। আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি নিজে কোন বড় নেতা হিসেবে নয়। আজকে এসেছি সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হিসেবে।'
'আপনারা সকলে সাথে থাকলে আমাদের পরাজিত করার শক্তি কারো নেই। এই আওয়ামী লীগ সরকারকে বলে দিতে চাই ক্ষমতা ছাড়ার পর একা বাড়িতে যেতে পারবেন না। বাধ্য করবো প্রত্যেকটা শহীদের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা চেয়ে যেতে হবে। যাবার আগে বাবার স্লোগান আপনাদের বলে যেতে চাই— ‘‘নারায়ে তাকবীর" "নারায়ে তাকবীর" "নারায়ে তাকবীর", বলেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাহউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম চৌধুরী। হুম্মাম যখন ‘নারায়ে তকবির’ বলে তিনবার স্লোগান দেন, তখন সমাবেশস্থলে উপস্থিতি বিএনপি ও তাঁর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও ‘আল্লাহু আকবর’ বলে ধ্বণি দেন।
তাঁর স্লোগান নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপির নির্দিষ্ট একটা নীতিমালা আছে, নিজস্ব স্লোগান রয়েছে। যেটা সবাই মানেন। বিএনপির রাজনৈতিক স্লোগান আলাদা। বিএনপির সমাবেশে আমাদের স্লোগান দিয়েছে সবাই। তবে ব্যক্তিগত কারণে কেউ যদি কোনো স্লোগান দেয়, সেটি দলের মতাদর্শ প্রতিফলিত হয় না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, হুম্মাম নিজেই বলেছে যে, স্লোগানটি তাঁর ব্যক্তিগত। যেটি দেওয়ার আগেই সে নিজেও বলেছে বাবার স্লোগান দিয়েই বক্তব্য শেষ করছি। বিএনপির রাজনৈতিক স্লোগানও দিয়েছে। এর সাথে বিএনপির রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে এই স্লোগানকে আদর্শগতভাবে বিএনপির নড়বড়ে অবস্থানের কথারই বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য করেছে আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ দ্য রিপোর্ট ডট লাইভকে বলেন, ‘রাজাকারের সন্তানের হুংকার আর বানরের ভেংচি একই জিনিস। আর বিএনপি ও জামায়াত একে অপরের পরিপূরক। একই জায়গা থেকে সৃষ্টি। এই দুটো দলই হচ্ছে মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। কাজেই এদের আদর্শিকভাবে কোনো পার্থক্য নেই।’
হানিফ আরও বলেন, ‘এরা রাজাকারদের পৃষ্ঠপোষকতা করবে, রাজাকারদের পক্ষে কথা বলবে। পাকিস্তানের ভাবধারার আদর্শের অনুসারী হিসেবে চলবে। তাঁদের চিন্তা-চেতনা-ধ্যান পাকিস্তানের আদর্শে থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এ নিয়ে আমাদের ভাবনার কিছু নেই।’