অক্টোবর ২৬, ২০২৪, ০৩:২৪ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্মিথ কোজেনারেশনের ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের একটি সালিশি মামলায় যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী নিজের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক একটি চুক্তি বাতিলের দায়ে স্মিথ কোজেনারেশন ক্ষতিপূরণ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একটি মামলা করে। ১৯৯৭ সালে স্মিথ কোজেনারেশন তৎকালীন বাংলাদেশের সরকারের সাথে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য অনুমতি প্রদান করেছিল সরকার।
ফেসবুক পোস্টে মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও বলেন, এই মামলায় দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্ট অনেকটা এখতিয়ার বহির্ভূত একটি রায় প্রদান করে, যা আজ শুক্রবার আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়। যদিও বিষয়টির সাময়িক অবসান ঘটেছে তবে লুটেরা সরকারের দায় রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের সে সময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে না এনে ধামাচাপাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান স্মিথ কোজেনারেশনের ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের একটি সালিশি মামলায় যুক্তরাষ্ট্রে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা স্থগিত করা হয়েছে।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী নিজের ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কর্তৃক একটি চুক্তি বাতিলের দায়ে স্মিথ কোজেনারেশন ক্ষতিপূরণ দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে একটি মামলা করে। ১৯৯৭ সালে স্মিথ কোজেনারেশন তৎকালীন বাংলাদেশের সরকারের সাথে একটি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল এবং দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ-মাউন্টেড বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য অনুমতি প্রদান করেছিল সরকার।
ফেসবুক পোস্টে মুশফিকুল ফজল আনসারী আরও বলেন, এই মামলায় দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর ওয়াশিংটন ডিসি সার্কিট কোর্ট অনেকটা এখতিয়ার বহির্ভূত একটি রায় প্রদান করে, যা আজ শুক্রবার আদালত কর্তৃক স্থগিত করা হয়। যদিও বিষয়টির সাময়িক অবসান ঘটেছে তবে লুটেরা সরকারের দায় রক্তস্নাত বিপ্লবের মাধ্যমে গঠিত এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিতে পারে না। বাংলাদেশ সরকারের সে সময়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে এবং বিষয়টি বর্তমান সরকারের নজরে না এনে ধামাচাপাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।
স্মিথ কোজেনারেশন (বাংলাদেশ) নামের একটি বিদ্যুৎ কোম্পানি বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সালিশিতে পাওয়া ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার আদায়ে আদালতের শরণাপন্ন হলে এই আদেশ দেয়া হয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে Law360.com নামের নিউইয়র্কভিত্তিক একটি আইনি সংবাদমাধ্যম।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলা পত্রিকা ঠিকানার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার এড়াতে অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নর যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ডে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সরকারি বাসভবনে আশ্রয় নিয়েছেন। এ ঘটনায় নিউইয়র্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় যোগ দিতে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে যান অর্থ, বাণিজ্য এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২৬ অক্টোবর শনিবার পর্যন্ত চলবে এই সভা। অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র সফরকারী দলে রয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরসহ সাতজন ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা।
একাধিক সূত্র ঠিকানাকে জানিয়েছে, অর্থ উপদেষ্টা সালেহ উদ্দিন আহমেদ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ. মনসুরসহ ৯ কর্মকর্তা ওয়াশিংটনে একটি হোটেলে ওঠেন। সেখান থেকে তারা আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বার্ষিক সভায় যোগ দেন। কিন্তু আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির কারণে বৃহস্পতিবার তারা নির্ধারিত কোনো সভায় যোগ দিতে পারেননি। বরং গ্রেপ্তার আতঙ্কে তারা হোটেল ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যন্ডে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের সুরক্ষিত বাসায় অবস্থান করছেন।
`রাষ্ট্রদূতের বাসা কূটনৈতিক এলাকায় হওয়ায় পূর্বানুমতি ছাড়া সেখান থেকে পুলিশ কাউকে আটক করতে পারে না। ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের একটি সূত্র জানায়, অর্থ উপদেষ্টা এবং গভর্নর শুক্রবারের কোনো অনুষ্ঠানেই যোগ দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন। অনুষ্ঠান কাভার করতে বাংলাদেশ থেকে আগত এবং স্থানীয় সাংবাদিকরা সারাদিন অপেক্ষা করেও কোনো অনুষ্ঠানে তাদের দেখা পাননি,` সূত্রের বরাত দিয়ে লিখেছে ঠিকানা পত্রিকা।
ঠিকানা পত্রিকা আরও লিখেছে, দূতাবাস সূত্র জানায়, গ্রেপ্তার আদেশের খবর পাওয়ার পর ২৩ অক্টোবর বুধবার রাতে হঠাৎ করেই অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নর ওয়াশিংটন ডিসির ১০ নং সড়কে অবস্থিত অ্যাম্বেসি স্টু হোটেল ছেড়ে দেন। দূতাবাসের গাড়িতে করে তারা দুইজনই ম্যারিল্যান্ডের বেথেসদা ৪ নং হাইবোরো কোর্টের বাসায় চলে যান। শুক্রবার সারাদিন তারা বাসা থেকে বের হননি। সেখানে বসেই দূতাবাসের মাধ্যমে আইনজীবী নিয়োগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।
www.law360.com এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়েছিলো। বিরোধের সূত্রপাত ১৯৯৭ সালে, বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে যখন স্মিথ কোজেনারেশন সরকার ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে একটি বার্জ-মাউন্টেড পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মাণের জন্য ক্রয় চুক্তি সই করে। ১৯৯৯ সালে সরকার চুক্তি বাতিল করায় স্মিথ কোজেনারেশন ক্ষতিপূরণ দাবি করে মামলা করে।
স্মিথ কোজেনারেশন বলেছে যে, তারা ২০০২ ও ২০০৩ সালে লন্ডনের ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অফ কমার্স ট্রাইব্যুনাল থেকে পাওয়া সালিশি রায় কার্যকর করার জন্য বছরের পর বছর ধরে লড়াই করছে।
বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে এই আদেশের বিরুদ্ধে দ্রুত আপিল দায়ের করা হয়। আপিলে যুক্তি দেয়া হয়েছে যে, সালেহউদ্দিন আহমেদ ও আহসান এইচ মনসুরকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেওয়ার কোনো এখতিয়ার নেই বিচারক নিকোলসের৷ অবিলম্বে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বাতিল করার অনুরোধ জানানো হয়।
স্মিথ কোজেনারেশন সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং আহসান এইচ মনসুরকে বাংলাদেশের অর্থায়নের "দুইজন সিনিয়র নেতা" হিসাবে বর্ণনা করেছে এবং বলেছে যে, কয়েক দশকের দীর্ঘ প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে তাদের জবানবন্দি প্রয়োজন।
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টার এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে, কিন্তু তাদের কেউই প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
`এই পত্রিকাটি প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের সাথেও যোগাযোগ করেছে, তবে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি,` ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স ডিএম সালাউদ্দিন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (উত্তর আমেরিকা) খন্দকার মাসুদুল আলমের সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের মন্তব্য পায়নি ডেইলি স্টার।
আরও পড়ুন: অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নরের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
পত্রিকাটির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দুই শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, তারা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত নন।
স্মিথ কোজেনারেশন, অবমাননার নিষেধাজ্ঞার জন্য তাদের প্রস্তাবে বলেছে, সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং আহসান মনসুরকে আদালতের আদেশের বিষয়ে সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য বুধবার হাজির হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এই তারা হাজির হননি।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুরের ওয়াশিংটনে থাকার কথা উল্লেখ করে স্মিথ কোজেনারেশন বলেছে যে, এই সফরটি হতে পারে জবানবন্দি নেওয়ার একমাত্র সুযোগ। কারণ কোম্পানিটি বাংলাদেশি সম্পদের তাড়া করছে।