সেপ্টেম্বর ১, ২০২৩, ০৬:০২ পিএম
লুটেরা-সন্ত্রাসীতে বিশ্বাসীরা মানুষের জন্য কিছু করতে পারে না মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা নস্যাৎ করার জন্য শুরু থেকেই চক্রান্ত চলছে। খালেদা জিয়া দুর্নীতিতে বাংলাদেশকে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন বানিয়েছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে হত্যা ও নির্যাতন করেছিল। তারা হাওয়া ভবন খুলে দেশটাকে লুটপাট ও জঙ্গির দেশ বানিয়েছিল। যার ফলে জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল।
শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সমাবেশে এ কথা বলেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
দেশের প্রতিটি অধিকার আদায়ের আন্দোলনে ছাত্রলীগের নাম জড়িত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অস্ত্র নয়, ছাত্রলীগের হাতে খাতা-কলম তুলে দিয়েছিলাম। আর খালেদা জিয়া ছাত্রদলের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিলেন। এরা মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারে না। অশিক্ষিত- মূর্খদের হাতে দেশ এগোতে পারে না। এদিকে ছাত্রলীগ মানুষে বিপদে পাশে দাঁড়ায়। আমি বলেছি, কৃষকদের পাশে দাঁড়াতে, সবাই চলে গেছে মাঠে। গিয়ে কৃষকের ধান কেটে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের যেকোনো দুর্যোগে-দুর্বিপাকে ভূমিকা পালন করে ছাত্রলীগ, মানুষের মুক্তির জন্যই এই ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা। ছাত্রলীগ কখনোই পিছপা হয়নি। ১-১১ এর সময়ও আপোস করেনি। জরুরি অবস্থা জারি হয়েছিল, তা-ও তারা এগিয়ে এসেছিল।’
অনেক সংস্থা মানবাধিকারের কথা বলে, ৭৫’ এর ১৫ আগস্ট তারা কোথায় ছিল প্রশ্ন তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খুনিদের কাছে জীবন ভিক্ষা চাননি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আমরা যদি পঁচাত্তরের হত্যাকাণ্ডের কথা চিন্তা করি, যারা হত্যা করেছে তারা জাতিকে কী দিয়েছে। ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে দিতে চেয়েছে, জয় বাংলা স্লোগান নিষিদ্ধ করেছে। পরাজিত শক্তিকে পুনর্বাসন করেছিল খুনি মোশতাক- জিয়া ক্ষমতায় আসার পর। আজকে যেকেউ হত্যার শিকার হলে বিচার চায়, আমার প্রশ্ন সেই ১৫ আগস্ট হত্যার পর আমাদের কি বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না?’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তিনি শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে যাননি, সারাজীবন মানুষের মুক্তির জন্য কাজ করে গেছেন। এই ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাই হয়েছিল বাঙালির মুক্তির জন্য।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০০৭ সালে যখন জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। তখনও ছাত্রলীগই এগিয়ে এসেছিল। এই তারুণ্যের শক্তিই এগিয়ে নিয়ে যাবে বাংলাদেশকে। আমিও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন সদস্য ছিলাম। ক্যাবিনেটের সবাই কিন্তু ছাত্রলীগ থেকে উঠে আসা। যেকোনো দুর্যোগে-দুর্বিপাকে ভূমিকা পালন করে। ১-১১ এর সময়ও আপোস করেনি।’
এর আগে বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে ছাত্রলীগের সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেনের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে এ সময় তাঁকে স্বাগত জানান ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতারা।
শেখ হাসিনা মঞ্চে আসন গ্রহণের পর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাবেশ শুরু হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব স্মরণে এ সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রলীগ। ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এদিকে ছাত্রসমাবেশ ঘিরে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও এর আশপাশের এলাকায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশসহ নিরাপত্তার দায়িত্বে কাজ করছে র্যাব। যানবাহন চলাচলে ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকেও নেওয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।