চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ইসলামী ব্যাংকের ‘বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন’ পরীক্ষার তালিকাভুক্ত কর্মীরা শনিবার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ১১টার দিকে ফৌজদারহাট পুলিশ ফাঁড়ির কাছে তারা মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু করেন। বেলা ১২টার দিকে নারী-পুরুষ মিলিয়ে সহস্রাধিক কর্মী মহাসড়কে বসে পড়েন এবং বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন। এর ফলে মহাসড়কের উভয় দিকের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এবং দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়।
এর আগে শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ঘোষণা করেছিলেন। শনিবার সকাল থেকে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন চালানো হয়।
পৌনে একটায় পুলিশ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করার পর অবরোধ তুলে নেয়। এরপর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। বার আউলিয়া হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তা আবদুল মোমিন জানান, “মোতাবেক কর্তৃপক্ষকে আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে অবহিত করা হবে।”
আন্দোলনকারীদের প্রধান দাবি ছিল— চাকুরিচ্যুত কর্মকর্তাদের স্বপদে বহাল করা; আন্দোলনে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের শাস্তিমূলক বদলি বন্ধ করা; চট্টগ্রামের কর্মকর্তাদের ওপর চালানো মানসিক ও শারীরিক নির্যাতনের সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করা।
শুক্রবারের সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছিলেন, বর্তমান ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের হাতে বরখাস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আন্দোলনকারী এসএম এমদাদ হোসেন অভিযোগ করেন, চট্টগ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় তারা ব্যাংকে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। ইতোমধ্যে ৩০০-এর বেশি কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং ৫ হাজারের বেশি কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা শাস্তিমূলক বদলি করা হয়েছে।
দাদার অভিযোগ, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ইউজার আইডি, স্টাফ অ্যাকাউন্ট এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিয়েছে। ২৫ তারিখে বেতন পাওয়ার পরও কেউ বেতন তুলতে পারছেন না।
রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংকে হাজার দশেককে মৌখিক নির্দেশে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, যা ২০১৬ সালের তুলনায় জনবল বেড়ে ২২ হাজারে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ যোগ্যতা মূল্যায়ন পরীক্ষার জন্য ৫ হাজার ৩৮৫ জনকে অংশগ্রহণের জন্য ডাকা হয়। ব্যাংকের অনেক কর্মী অভিযোগ করেছেন যে, পরীক্ষার মাধ্যমে কয়েক হাজার সহকর্মীকে চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে।