জুন ১৫, ২০২৪, ০২:২৪ পিএম
সেন্টমার্টিনে মিয়ানমারের গোলাগুলিতে বাংলাদেশ আক্রান্ত হলে জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, এই নিয়ে দেশটির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে।
শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে এ কথা বলেন তিনি। ওবায়দুল কাদের বলেন, “যুদ্ধকে পরিহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা চলছে ও চলবে। তবে আক্রান্ত হলে জবাব দেওয়া হবে।”
সেতুমন্ত্রী বলেন, “আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি এবং করে যাবো যুদ্ধকে পরিহার করে। তবে আমরা আক্রান্ত হলে সে আক্রমণের জবাব দেব। আমাদের খাটো করে দেখার কিছু নেই। আমরা প্রস্তুত আছি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ কিছু সংকট আছে। তাদের ৫৪টি নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী আছে। তাদের নিজেদের মধ্যে বিরোধ রয়েছে মতানৈক্য নেই। তাদের অভ্যন্তরীণ সংকটে আমরা যদি ভুক্তভোগী হই (সাফার করি) তবে সেটা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। সেখানে সরকারে আছে সামরিক শাসক।”
রোহিঙ্গা সমস্যা বাংলাদেশের ওপর জেঁকে বসেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদারভাবে সীমান্ত খুলে দিয়েছিলেন। এজন্য তাকে মানবতার মা বলা হয়। এখন বিশ্বের বড় বড় দেশ ও সংগঠনগুলো এজন্য আমাদের প্রশংসা করে, লিপ সার্ভিস দেয়। কিন্তু রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনে যে সাহায্য তার পরিমাণ অনেক কমে গেছে।”
তিনি আরও বলেন, “অর্থনৈতিক চলমান সংকটে আমরা চিন্তায় আছি। ১০-১২ লাখ রোহিঙ্গা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে আছে। দুনিয়ার বড় বড় দেশগুলো যারা এই সংকট নিয়ে কথা বলে। আমাদের লিভ সার্ভিসের দরকার নেই। দরকার আমাদের কাঁধ থেকে রোহিঙ্গাদের বোঝা নামিয়ে ফেলা। আমরা সার্বিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যেখানেই যান সর্বাগ্যে রোহিঙ্গা প্রসঙ্গ উপস্থাপন করেন।”
সড়কে যানজট নিয়ে ওবায়দুল কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “কিছু কিছু জায়গায় যানজট হলেও কোথাও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি।”
তিনি আরও বলেন, “এবারের ঈদটা ভিন্ন। ধীরগতির পশুবাহী গাড়ি, সড়কের পাশে পশুর হাট একটা সমস্যা। যানজটের জন্য রাস্তা কোনও সমস্যা না। এবার সড়কে অনেক বেশি গাড়ি। গাড়ির ভিড়টা অনেক বেশি। কোথাও কোনও যানজট হচ্ছে না- অস্বীকার করে লাভ নেই। কিন্তু ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়নি। আশা করি, সামনের দিনগুলো ভালো যাবে।”
যেকোনও সময় সরকারের পতন ঘটবে- বিএনপির দাবি হাস্যকর: ওবায়দুল কাদের
যেকোনও সময় সরকারের পতন হবে- বিএনপির এমন দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, “এক কথায় বলবো এটা তাদের দিবাস্বপ্ন। সরকার পরিবর্তন হয় গণঅভ্যুত্থানে না হয় নির্বাচনে। ২০২৪-এর ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হয়ে গেল। গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটবে এটা হাস্যকর। তাদের নেতাকর্মীরাই তো আন্দোলনে শামিল হয় না।”
বিএনপি নেতাকর্মীরা আন্দোলনের মানসিকতায় নেই বলে ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “জনগণ যে আন্দোলনে সম্পৃক্ত থাকে না সেটা কখনও গণঅভ্যুত্থান হতে পারে না। এদেশে একমাত্র গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল ‘৬৯ সালে।এরপর আর কোনও অভ্যুত্থান হয়নি। ‘৯০-এ গণআন্দোলন হয়েছে, গণঅভ্যুত্থান নয়। যে আন্দোলনে স্বৈরাচার এরশাদের পতন হয়েছে।”
ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশ নিয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্যের জবাব
মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লুর বাংলাদেশকে নিয়ে সাম্প্রতিক মন্তব্য প্রসঙ্গে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা আমাদের সংবিধান অনুসরণ করি, সংবিধান অনুযায়ী চলবো। ডোনাল্ড ল্যু কোথায় কি বললেন সেটা নিয়ে আমাদের মাথা ঘামানোর কোন প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না। তারা কোন সময় কোন বিষয়কে নিয়ে নিন্দা করে আবার প্রশংসা করবে সেটা তাদের বিষয়। আমরা আমাদের নীতিমালার আলোকে সংবিধানকে অনুসরণ করে এগিয়ে যাবো।
ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সুজিত রায় নন্দীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।